Skip to main content

কোন শাক-সবজি ও ফলের কী ভিটামিন?


শাক-সবজি, মসলা, উদ্ভিদ ও ফলের  ভিটামিন/পুষ্টি/গুণাগুণ ও উপকারিতা

আসুন প্রথমে জেনে নেই সবজির শ্রেণীবিন্যাস:
উদ্ভিদের অঙ্গবিন্যাস ও গঠনের উপর ভিত্তি করে সবজিকে নিম্নলিখিতভাবে বিভিন্ন শ্রেণীতে ভাগ করা যায়ঃ


১. মূল জাতীয় সবজি(Root Crops) :
মুলা,গাজর,শালগম,বীট,মিষ্টি আলু,আদা ইত্যাদি। 

২. কান্ড জাতীয় সবজি(Tubers) :
গোল আলু,কচু,ওলকচু,আদা গ্লোব আর্টিচোখ,সিলেরি,মাশরুম,ফ্লোরেন্স ফিনেল,রেউচিনি গাছ ইত্যাদি। 

৩. পাতা জাতীয় সবজি(Leafy Crops) :
বীট পাতা,ধনিয়া পাতা,লাল শাক,পুদিনা পাতা,লেটুস,পালংশাক,পুঁইশাক,কর্ণসালাদ ইত্যাদি। 

৪.কপি জাতীয় সবজি(Cole Crops) :
বাঁধাকপি,ওলকপি,ফুলকপি,ব্রোকলি ইত্যাদি। 

৫. কন্দ জাতীয় সবজি(Bulb Crops) :
পেঁয়াজ,রসুন ইত্যাদি। 

৬. ফল জাতীয় সবজি(Fruit Crops) :
টমেটো,মরিচ,সজিনা,বেগুন,মিষ্টি কুমড়া ইত্যাদি। 

৭. শিম জাতীয় সবজি(Beans Crops) :
দেশি শিম,ঝাড় শিম,মটরশুঁটি ইত্যাদি। 

৮. লতা জাতীয় সবজি(Creeping Plant Crops) :
কাঁকরোল, চালকুমড়া, চিচিঙ্গা, ঝিঙা, ধুন্দল, পটল, বরবটি  ইত্যাদি। 

৯. মশলা জাতীয় সবজি(Spices Crops) :
হলুদ, তেজপাতা, দারুচিনি, গোলমরিচ, মৌরি ইত্যাদি।


মৌসুমী শাকসবজির গুনাগুন:
আমরা জানি আমাদের শরীরের পুষ্টিসাধন এবং নিয়মিত ও সুষ্ঠু বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন সুষম খাদ্য। সুষম খাদ্যে থাকে ৬টি উপাদান। যথা : (১) আমিষ বা প্রোটিন, (২) শর্করা বা শ্বেতসার, (৩) স্নেহ বা তেলজাতীয় খাদ্য, (৪) ভিটামিন, (৫) খনিজ লবণ এবং (৬) পানি। প্রোটিন, শ্বেতসার আর স্নেহ পদার্থ আমাদের শরীরের বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য অবশ্য প্রয়োজনীয় এবং এরা আমাদের শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করে থাকে। কিন্তু শরীরের রোগ প্রতিরোধে, শরীরের ক্ষয় বা ঘাটতি পূরণে, দীর্ঘকালীন রোগভোগের সময়, দৈনন্দিন খাদ্য গ্রহণে অনীহা দূরীকরণে এবং শরীরকে কর্মোময় ও প্রাণবন্ত রাখতে আমাদের প্রয়োজন হয় কিছু খনিজ লবণ ও ভিটামিন তথা খাদ্য প্রাণের।

মিষ্টি কুমড়া ‍Sweet pumkin:
বহু পুষ্টিগুন সম্পন্ন একটি সবজি মিষ্টি কুমড়া। এটি এক ধরনের হলুদ বড় আকৃতির সবজি। মিষ্টি কুমড়া এক ধরণের সুস্বাদু ও পুষ্টিকর সবজি। এর পাতা ও কান্ড সবজি হিসেবে খাওয়া হয়। মিষ্টি কুমড়া তরকারি ও ভাজি হিসেবে খাওয়া হয়ে থাকে। প্রায় সারা বছর দেশের সবস্থানে কম বেশি এ সবজি পাওয়া গেলেও গ্রীষ্ম-বর্ষার সময় তা একটু বেশিই পাওয়া যায় বাজারে। এ সবজিতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-এ ও ভিটামিন-সি। নিয়মিত মিষ্টি কুমড়া খেলে চোখের ছানি পড়া জটিলতা থেকে দূরে থাকা যায়। রিউমাটিয়েড আর্থ্রাইটিস রোগীর জন্যও মিষ্টি কুমড়া খুবই উপকারী একটি সবজি। এই সবজি কিডনির ইনফেকশনজনিত সমস্যা, মূত্রথলির কষ্ট ইত্যাদিও লাঘব করে। এর যে ভিটামিন ‘সি’ আছে তা কাটা-ছেঁড়া, ঘা ইত্যাদি দ্রুত সারায়। ত্বকে ফোসকা, শরীরের কোথাও পুঁজ জমে গেলে তার বিরুদ্ধেও যুদ্ধ করে এর ভিটামিন ‘সি’। এই সবজিতে এক ধরনের তেল থাকে, যা পুরুষের প্রোস্টেটের কার্যক্ষমতা স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। যাদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, মুটিয়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা আছে তাদের মিষ্টি কুমড়া কম খাওয়া উচিত।
টমেটো tomatoes:
টমেটো একটি ফল হলেও আমাদের দেশে এটি সবজি হিসেবে পরিচিত। শুধু আমাদের দেশেই নয় সারা বিশ্বেই এটি একটি পরিচিত সবজি। সবজি এবং সালাদ হিসেবে ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ টমেটোর বেশ সমাদৃত। টমেটোতে প্রচুর পরিমাণে আমিষ, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন-এ এবং ভিটামিন-সি রয়েছে। টমেটোতে লাইকোপেন নামে বিশেষ উপাদান রয়েছে, যা ফুসফুস, পাকস্থলী, অগ্ন্যাশয়, কোলন, স্তন, মূত্রাশয়, প্রোস্টেট ইত্যাদি অঙ্গের ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। টমেটো একটি অন্যতম গুনাগুন সম্পন্ন সবজি হিসেবেই বেশি পরিচিত। টমেটো এবং টমেটো জাত সব কিছুই ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য কার্যকরী। টমেটোতে ভিটামিন এ থেকে শুরু করে কে পর্যন্ত প্রায় সব ভিটামিনই আছে। টমেটো ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। টমেটোতে প্যান্টোথেনিক এসিড আছে বলে হাতের তালু এবং পায়ের তালু জ্বালা করার উপসর্গ থেকে রেহাই পাওয়া যায়। 
পেঁয়াজ-Onions
পেঁয়াজের গুনাগুন গাজর, মিষ্টি আলুর মত একই হলেও পেঁয়াজের কিছু স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য পেঁয়াজকে সেরা দশে অন্তর্ভুক্ত করেছে। পেঁয়াজ আমাদের হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি সাহায্য করতে পারে। পেঁয়াজ হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ করে। পেঁয়াজ এলার্জি শ্বাসনালীর প্রদাহ,মুখ ও দৈনিক খাদ্যনালী ক্যান্সার ও ডায়াবেটিস থেকে মুক্ত রাখে। দৈনন্দিন জীবনে তরকারি রান্নায় পেঁয়াজের জুড়ি নেই। পেঁয়াজে আছে প্রচুর পুষ্টি উপাদান। পেঁয়াজ হৃৎপিণ্ডের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি সবজি। পেঁয়াজ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সহায়তা করে। পেয়াজ শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হওয়ার প্রক্রিয়াকে ধীরগতি সম্পন্ন করে।
গাজর Carrots:
গাজর একটি শীতকালিন সবজি। গাজর বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে। যেমনঃ কমলা, সাদা ,কালো,লাল,হলুদ,বেগুনি এবং রক্তবর্ণের। তবে আমাদের দেশে সাধারনত কমলা রঙের গাজরটাই বেশি পাওয়া যায়। গাজর কাঁচা এবং রান্না করা এই দুই অবস্থাতেই খাওয়া যায়। গাজরের পুষ্টিগুন অনেক। গাজর হল বিটা- ক্যারোটিন,ভিটামিন-এ,ভিটামিন-সি এবং অনেক গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমূহের সমৃদ্ধ উৎস। গাজর উন্নত দৃষ্টি প্রতিষ্ঠা,ক্যান্সার, উজ্জ্বল ত্বক,শক্তিশালী এন্টিসেপটি্‌, হার্ট ডিজিজ প্রতিরোধ,স্বাস্থ্যকর দাঁত এবং মাড়ি,স্ট্রোক প্রতিরোধ প্রভৃতি ক্ষেত্রে বলিষ্ঠ ভুমিকা পালন করে। যকৃত ও পিত্তের অপ্রয়োজনীয় চর্বি হ্রাসের পাশাপাশি গাজর অনিদ্রা ও মাথাব্যথার মত অনেক জটিল সমস্যার সমাধান দিয়ে থাকে। গাজর একটি বিস্ময়কর সবজি। গাজর ত্বকের সৌন্দর্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। গাজরে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি আছে। গাজর শরীরের রক্ত চলাচল প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখে এবং হৃৎপিণ্ডের উপকার করে।
মিষ্টি আলু Sweet-potato:
আমাদের দেশে ২ ধরনের আলু পাওয়া যায়। এর মধ্য মিষ্টি আলু অন্যতম। আমাদের দেশে লাল এবং সাদা এই ২ ধরনেরই মিষ্টি আলু পাওয়া যায়। মিষ্টি আলুতে ভিটামিন এ, বিটা-ক্যারোটিন, ভিটামিন বি৬,ভিটামিন সি ভিটামিন ডি,খনিজ ম্যাগনেসিয়াম আছে। মিষ্টি আলু হার্ট এটাক, ফ্লু ভাইরাস, ক্যান্সার, বিষক্রিয়াগত মাথাব্যথা থেকে আমাদেরকে মুক্ত রাখে। এছাড়াও হাড়, হার্ট, স্নায়ু, চামড়া, ও দাঁত নির্মাণ, লাল এবং সাদা রক্ত কণিকা উত্পাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মিষ্টি আলুতে প্রচুর পরিমানে ক্যান্সার প্রতিরোধী উপাদান আছে। মিষ্টি আলুতে আছে ভিটামিন এ, সি ও ম্যাঙ্গানিজ। মিষ্টি আলু ফাইবার ও আয়রনের ভালো উৎস। তাই মিষ্টি আলু পুষ্টি যোগানোর পাশাপাশি হজম প্রক্রিয়াও স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে।
বেগুন Eggplant:
বেগুন আমদের দেশের একটি অতি পরিচিত একটি সবজি। আমাদের দেশে অনেক প্রজাতির বেগুন পাওয়া যায়। সব ধরনের বেগুনের পুষ্টিগুণ প্রায় একই। বেগুনে প্রচুর পরিমানে ফাইবার, খনিজ, ভিটামিন এ ভিটামিন বি,ভিটামিন সি পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম প্রোটিন, খনিজ পদার্থ ম্যাঙ্গানিজ এবং থায়ামাইন আছে। বেগুন রক্তে কলেস্টেরল কমায়, পরিপাক প্রক্রিয়া সাহায্য করে এবং করোনারি হার্ট রোগ প্রতিরোধ, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।


ক্যাপসিকাম Capsicun/bell-peppers:
ক্যাপসিকাম সারা পৃথিবীতে মিষ্টি মরিচ নামে পরিচিত। ক্যাপসিকাম সবুজ, লাল, হলুদ, কমলা, চকলেট রঙের হয়ে থাকে। ক্যাপসিকামে ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, বিটা-ক্যারোটিন, আলফা-ক্যারোটিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি৬ ভিটামিন কে আছে। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে ক্যাপসিকাম ফুসফুস, কোলন, থলি এবং অগ্নাশয় ক্যান্সার থেকে মুক্ত রাখতে পারে।

ওলকচু Elephant foot yam or Elephant yam :

অর্শ রোগীর জন্য এটি সুপথ্য, কারণ এটি টিউমার প্রতিরোধে সাহায্য করে। তবে এতে আছে ‘ক্যালসিয়াম অঙালেট’ যা কিডনিতে পাথর সৃষ্টি করে।


মাশরুম Mushroom :
বর্তমানে আমাদের দেশে এটি একটি জনপ্রিয় সবজি। সম্প্রতি মাশরুম গবেষণা কেন্দ্র এর একটি গবেষণায় জানা গেছে এটি ডায়াবেটিস, জণ্ডিস, উচ্চরক্তচাপ, ক্যান্সার, টিউমার, ডেঙ্গুজ্বর, মেদভুঁড়ি প্রভৃতি রোগ নিরাময় করে থাকে। লোহা, তামা, পটাশিয়াম, ভিটামিন সমৃদ্ধ।

উচ্ছে-করলা Balsam pear, alligator pear, bitter gourd, bitter melon, bitter cucumber :

এতে আছে গ্লাইকোসাইড নামক পদার্থ, যা যকৃৎ ও পিত্তথলীর রক্ষাকারী। প্রত্যেহ তেতো সবজি করলা খাবারে রুচি বাড়ায় ও মেদ বৃদ্ধির আশঙ্কা কমায়। অনেক সময় নিমগাছের কচি পাতা ভেজেও খাওয়া হয়। এতে ত্বকের চুলকানি ও কৃমি রোধে উপকার পাওয়া যায়। খেতে বসে প্রথম ডিশ হিসেবে যদি তেতো খাওয়া হয়, তাহলে সেটা মুখে লালা ক্ষরণ করে শ্বেতসারকে ভাঙতে সাহায্য করে। এতে হজমের সুবিধা হয় ও লিভারও ভালো থাকে।


সয়াবিন Soyabean :
একে বলা হয় উদ্ভিজ প্রোটিনের ভাণ্ডার তথা পুষ্টির রানী। সয়াবিন থেকে পাওয়া যায় তেল, ডাল, দুধ, শাক এমনকি খৈল, যা খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যদিও আমাদের দেশে এটির চাষ তেমন জনপ্রিয় নয়। এটি ক্যান্সার প্রতিরোধক এবং হরমোনজনিত সমস্যায় উপকারী। শাকে আছে প্রচুর খনিজ পদার্থ, গরীব মানুষ আমিষের অভাব পূরণের জন্য মাংসের বিকল্প হিসেবে সয়াবিনের ডাল এবং খৈলের তৈরি সুস্বাদু বড়া খেতে পারেন।

শসা Cucumber :

এটি প্রোটিন পরিপাকে সহায়ক। কিডনি ও পাকস্থলী প্রদাহ নিরাময়ে ফলপ্রসূ।


বাঁধাকপি Cabbage :
কমলালেবুর চেয়েও বেশি ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ। আছে আয়োডিন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম ও ভিটামিন ‘সি’ এবং ‘ই’। বাঁধাকপি, ফুলকপি রক্তে প্রোথ্রোথিন তৈরি হতে সাহায্য করে।


বিট Bit : এতে সব চেয়ে বেশি আছে আয়রন। প্রচুর খনিজ ও ভিটামিনে ভরপুর। রক্ত পরিষ্কার করতে, যকৃতের অসুস্থতায়, কোষ্ঠকাঠিন্যে, স্নায়ুতন্ত্রের সুস্থতা রক্ষায় বিট উপকারী।  

ফুলকপি "Cauliflower:
এটি একটি বার্ষিক ফসল যা বীজের মাধ্যমে বংশবিস্তার করে। সাধারণতঃ ফুলকপির ফুল অর্থাৎ সাদা অংশটুকুই খাওয়া হয় আর সাদা অংশের চারপাশে ঘিরে থাকা ডাঁট এবং পুরু, সবুজ পাতা দিয়ে স্যুপ রান্না করা হয় অথবা ফেলে দেওয়া হয়। ফুলকপি খুবই পুষ্টিকর একটি সবজি; এটি রান্না বা কাচা যে কোন প্রকারে খাওয়া যায়, আবার এটি দিয়ে আচারও তৈরি করা যায়।

পাতা দিয়ে ঘিরে থাকা সাদা অংশটুকু দেখতে ফুলের মতো বলেই ফুলকপির এমন নামকরণ। এর বৈজ্ঞানিক নাম ব্রাসিকা অলিরাসিয়া (en:Brassica oleracea), যার মধ্যে বাঁধাকপি, ব্রকলি ইত্যাদিও পড়ে, অবশ্য এরা ভিন্ন চাষ গোত্রভুক্ত ফুলকপিতে রয়েছে ভিটামিন ‘বি’,‘সি’,‘কে’, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম ও জিংক। একটি মাঝারি আকারের ফুলকপিতে রয়েছে শক্তি-২৫ কিলোক্যালরি, কার্বোহাইড্রেট-৪.৯৭ গ্রাম , প্রোটিন-১.৯২ গ্রাম , ফ্যাট-০.২৮ , আঁশ-২ গ্রাম, ফোলেট-০.৫৭ মাইক্রোগ্রাম, নিয়াসিন-০.৫০ মাইক্রোগ্রাম, থায়ামিন-০.০৫ , প্যানথানিক এসিড-০.৬৬৭ মাইকোগ্রাম। বাঁধাকপি, ফুলকপি রক্তে প্রোথ্রোথিন তৈরি হতে সাহায্য করে।

আলু Potato:

আলু একটি সুষম ও পুষ্টিকর খাবার। আলু'র বৈজ্ঞানিক নাম Solanum tuberosum(সোলানাম টিউবারোসাম)। এতে একদিকে যেমনি ভাতের মতো শর্করা আছে তেমনি সবজির মতো ফাইবার বা তন্তু, খনিজ লবণ, ভিটামিন ও উদ্ভিজ্জ্জ প্রোটিন আছে। প্রতি ১০০ গ্রাম আলুতে শর্করা আছে ১৯ গ্রাম, খাবার আঁশ ২.২ গ্রাম, উদ্ভিদ প্রোটিন ২ গ্রাম, খনিজ লবণ ০.৫২ গ্রাম যার মধ্যে পটাশিয়াম লবণই ০.৪২ গ্রাম, এবং ভিটামিন ০.০২ গ্রাম। অপরদিকে ১০০ গ্রাম চালে ৮০ গ্রাম শর্করা, খাবার আঁশ ১.৩ গ্রাম, উদ্ভিজ্জ্জ প্রোটিন ৭.১৩ গ্রাম, খনিজ লবণ ০.২৮ গ্রাম এবং ভিটামিন আছে মাত্র ০.০০২ গ্রাম। তাই আলুর মধ্যে ভাতের তুলনায় শর্করা কম থাকলেও অন্যান্য উপাদান বেশি আছে। প্রয়োজনীয় খাদ্যপ্রাণ বেশি থাকায় এটি একটি সুষম খাবার হিসেবে ব্যবহার করা যায়।


ঝিঙে:
ঝিঙা (ইংরেজিLuffa), ভিয়েতনামী ঝিঙাভিয়েতনামী লাউ, বা চীনা অক্রা একটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বর্গ এবং উপ-গ্রীষ্মমণ্ডলীয় লতাজাতীয় উদ্ভিদ যা শসা কিউকুয়াবিটাশা পরিবারে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে।

চিচিঙ্গা:
চিচিঙ্গা বাংলাদেশের সকলের নিকট প্রিয় অন্যতম প্রধান গ্রীষ্মকালীন সবজি। এর অনেক ঔষধী গুণ আছে। চিচিঙ্গার ১০০ ভাগ ভক্ষণযোগ্য অংশে ৯৫ ভাগ পানি, ৩.২-৩.৭ গ্রাম শর্করা, ০.৪-০.৭ গ্রাম আমিষ, ৩৫-৪০ মিঃগ্রাঃ ক্যালসিয়াম, ০.৫-০.৭ মিঃগ্রাঃ লৌহ এবং ৫-৮ মিঃগ্রাঃ খাদ্যপ্রাণ সি আছে।
বিএডিসি ‘ঝুম লং’ নামের একটি জাতের বীজ উৎপাদন করছে। এর ফল নীলাভ কালচে সবুজ ও দীর্ঘ। ফলধারী আরো একটি জাত ‘সাদা সাভারী’ নামে পরিচিত। তাছাড়া তিস্তা, তুরাগ, সুরমা, রূপসা, বিভিন্ন জাত এদেশে চাষ হয়।

সবজি হিসেবে ঝিঙে, চিচিঙ্গা দুটিরই জনপ্রিয়তা রয়েছে। তবে অনেকের কাছে একসঙ্গে দুটি সবজিই পছন্দ নয়। কেউ বেছে নেন ঝিঙে, কেউবা চিচিঙ্গা। এটি কেবল স্বাদের কারণে। আর যাঁরা পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জেনে খেতে চান, তাঁদের জন্য কোনটি? ঢাকার বারডেম জেনারেল হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ পথ্য ও পুষ্টিবিদ শামছুন্নাহার নাহিদ বলেন, দুটিতেই জলীয় অংশ বেশি রয়েছে। ক্যালরির পরিমাণ খুবই সামান্য। ঝিঙেতে আঁশের পরিমাণটা বেশি। দুটি সবজিই রক্তের চিনি নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং ওজন কমায়। আর যাদের আলসারের সমস্যা আছে তাঁদের চিচিঙ্গা খাওয়া ভালো। এখানে প্রতি ১০০ গ্রাম ঝিঙে ও চিচিঙ্গায় খাদ্য উপাদান উল্লেখ করা হলো।

খাদ্য উপাদান                       ঝিঙে                চিচিঙ্গা
ক্যালরি                                     ১৬                   ৩০
প্রোটিন                               ০.৮ গ্রাম         ০.৫ গ্রাম
চর্বি                                        ০.১ গ্রাম       ০.৫ গ্রাম
কার্বোহাইড্রেট                       ৩.৮ গ্রাম     ৩.৩ গ্রাম
সোডিয়াম                           ১ মিলিগ্রাম            নেই
পটাশিয়াম                           ১৫০ মিলিগ্রাম      নেই

ধুন্দল:

ধুন্দুল একটি সুস্বাদু সবজি। ইংরেজীতে এর নাম বা এবং লেটিন ভাষায় । কাঁচা ফল সবজি হিসাবে ব্যবহার হয়। পাকা এবং শুকনা ফল গোসলের সময় গা ঘঘসার জন্য এবং রান্না ঘরে বাসন কোসন পরিস্কার করার কাজেব্যবহার করা হয়। ধুন্দুলের পছন্দীয তাপ মাত্রা ৩০-৩৫ক্ক ডিগ্রী সেন্ট্রিগ্রট এবং সর্বনিম্ন গড় তাপ মাত্রা ২০ক্ক সেন্ট্রিগ্রেড। ছায়ামুক্ত পরিবেশে, পর্যাপ্ত আলো জলাবদ্ধতামুক্ত, যৈবসার সমৃদ্ধ মাটি ধুন্দুলের পছন্দ।

অতিরিক্ত নাইট্রোজেন সার এ ফসলের মোটোই পছন্দ নয়। কারণ অতিরিক্ত নাইট্রোজেন তৈাপাতার উৎপাদন বৃদ্ধি করে কিন্তু পূল ফল কম হয়। বহু গুন সমৃদ্ধ সবজি ধুন্দুল। উল্লেখযোগ্য গুনের মধ্যে আছে।:

১. ধুন্দুলে আছে ইনসুলিন যা ডায়াবেটিক নিরাময় সহায়তা করে।
২. মানব দেহে অতিরিক্ত কোলেসট্রল এবং মেদ কমাতে সহায়তা করে।
৩. খাদ্য হজমে এবং জন্ডিস রোগ সারাতে সাহায্য করে।
৪. ধুন্দ লে আছে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, এবং বি- ভিটামিন।
৫.ধুন্দুলে আরো আছে এন্টি অকসিডেন্ট, এন্টিমাইক্রোবিয়াল, কার্ডিওপ্রোটেকটিভ, নেফরোপ্রোটেকটিভ, এন্টিক্যান্সার, এন্টি আলসার, গ্যাসট্রোপ্রোটেকটিভ,লাইপোলিপিডেমিক, পোটোপ্রোটেকটিভ, ও হাইপোলিপিডেমিক,গুনাবলী।

চালকুমড়া:

ইংরেজি : Ash gourd, winter melon, white gourd, winter gourd। বৈজ্ঞানিক নাম : Benincasa hispida Thunb। বাংলা সমার্থক নাম : চালতা, চালিতা। Cucurbitaceae গোত্রের এক প্রকার লাতনো গাছ। এদের আদি নিবাস ভারত উপমহাদেশ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া। বাংলাদেশে এর অনেকগুলো উপ-প্রজাতি আছে। বাংলাদেশে সব এলাকায় কুমড়ার চাষ হয়। জাত বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট বারি চালকুমড়া-১ নামে একটি উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবন করেছে। এ জাতটি বাংলাদেশের সব অঞ্চলে এর চাষ করা যায়।

চাল কুমড়া মূলত সব্জি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া চালকুমড়ার বড়ি, মোরব্বা তৈরি করা হয়। এটি ফুসফুসের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এর বীজ কৃমিনাশক। এর রসের সাথে চিনি মিশিয়ে খেলে অজীর্ণ রোগ দূর হয়। এর রসের সাথে জাফরান ও চিনি মিশিয়েচ খেলে মৃগী রোগের উপকার হয়। উন্মাদ রোগ নিরাময়েও এই রস ব্যবহার করা হয়।

পটল
মুলা
সজিনা,
কলার মোচা,
ঢেঁড়স,
ওলকপি,
শিম,
কচু,
বরবটি,
মটরশুটি।

পাটশাক:

প্রত্যেহ তেতো সবজি তেতো পাটশাক খাবারে রুচি বাড়ায় ও মেদ বৃদ্ধির আশঙ্কা কমায়। খেতে বসে প্রথম ডিশ হিসেবে যদি তেতো খাওয়া হয়, তাহলে সেটা মুখে লালা ক্ষরণ করে শ্বেতসারকে ভাঙতে সাহায্য করে। এতে হজমের সুবিধা হয় ও লিভারও ভালো থাকে।


ধনেপাতা:
ধনে হলো মসলা, আর ধনের গাছটি হলো সবজি। এই ছোট্ট গাছের পাতাগুলো স্বাদে যেমন গন্ধেও তেমনি। তাই খাবার ও আচারে ব্যবহার করা হয় ধনেপাতা। বারডেম জেনারেল হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ পুষ্টিবিদ শামছুন্নাহার নাহিদ বললেন, ‘ধনেপাতা ভিটামিন এ, সি এবং কে-এর ভালো উৎস। আছে অল্প পরিমাণে ভিটামিন বি-ও। খনিজের মধ্যে আছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম। এ ছাড়া আছে আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ, সোডিয়াম। যাদের রক্তে পটাশিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজের পরিমাণ বেশি, তারা ধনেপাতা ১০ থেকে ১৫ মিনিট পানিতে ভিজিয়ে, পানিটা ফেলে দিয়ে খেতে পারেন।’ ব্রিটিশ নিউট্রিশন ফাউন্ডেশনের গবেষণায় দেখা গেছে, ধনেপাতা শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের মতো কাজ করে, রোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে, সেই সঙ্গে প্রতিকারেও। সালমোনেলার মতো ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করার অসাধারণ এক ক্ষমতা আছে ধনেপাতার। ধনেপাতার অন্য গুণগুলোও জেনে নেওয়া যাক এবার।

ভালো ঘুমে: বিভিন্ন ধরনের ফাইটোনিউট্রিয়েন্টসের অসাধারণ এক সমন্নয় থাকায় ধনেপাতা নার্ভকে শীতল রাখতে সক্ষম। তাই ঘুম হয় সহজে। যাঁদের নির্ঘুম রাত কাটে, তাঁরা খেতে পারেন ধনেপাতা।

ক্যানসার প্রতিরোধী: ধনেপাতায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে আছে বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন সিসহ প্রয়োজনীয় সব উপাদান, যা ক্যানসার কোষ প্রতিরোধে সক্ষম।

অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল গুণ: সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে ধনেপাতা। এই পাতায় আছে ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া ও ইস্ট প্রতিরোধী উপাদান।

রক্তের চিনি নিয়ন্ত্রণ: ধনেপতা খেলে রক্তের চিনি নিয়ন্ত্রণে থাকে। নিয়মিত খেলে ইনসুলিন নিঃসরণের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ফলে ডায়াবেটিস রোগীর রক্তের চিনির পরিমাণ কমে আসে।

হাড়ের স্বাস্থ্য:ধনেপাতায় আছে ক্যালসিয়াম। যা হাড়ের গঠন মজবুত করে।

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ: এক গবেষণায় দেখা গেছে, ধনেপাতা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দিতে সক্ষম আর ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে।

চোখের সুরক্ষায়: সবজিতে থাকা বিটা ক্যারোটিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চোখের জন্য খুব গুরত্বপূর্ণ, এটি চোখ ভালো রাখতে যেমন সাহায্য করে তেমনি চোখে ছানি পড়া প্রতিরোধ করে।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: ধনেপাতায় থাকা উপাদানাগুলো রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সক্ষম।

রক্তস্বল্পতা দূর করে: ধনেপাতায় আছে আয়রন। এই উপাদানটি রক্ত স্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে। তবে রান্না না করে ভর্তা কিংবা সালাদ খেলেই বেশি উপকার পাওয়া যাবে।
গ্রন্থনা: সিদ্ধার্থ মজুমদার

পুদিনাপাতা:
ঔষধি হিসেবে পুদিনা পাতার ব্যবহার  প্রাচীনকাল থেকেই।এছাড়া রূপচর্চার উপাদান হিসেবেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে এটি। জেনে নিন এর কিছু গুণাগুণ। 
* রোদে পোড়া ত্বকের জ্বালা কমাতে পুদিনা পাতার রস ও অ্যালোভেরার রস এক সাথে মিশিয়ে ত্বকে লাগান। ১৫ মিনিট রেখে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। 
* ব্রণ দূর করতে ও ত্বকের তেলতেলে ভাব কমাতে তাজা পুদিনা পাতা বেটে ত্বকে লাগান। ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। ব্রণের দাগ দূর করতে প্রতিদিন রাতে পুদিনা পাতার রস লাগান। সম্ভব হলে সারারাত রাখুন। যদি সম্ভব না হয়, তাহলে কমপক্ষে ২/৩ ঘণ্টা রাখুন। তারপর ধুয়ে ফেলুন। 
* চুলে উকুন হলে পুদিনার শেকড়ের রস লাগাতে পারেন। উকুনের মোক্ষম ওষুধ হল পুদিনার পাতা বা শেকড়ের রস।  চুলের গোড়ায় এই রস ভাল করে লাগান। এরপর একটি পাতলা কাপড় মাথায় পেঁচিয়ে রাখুন। এক ঘণ্টা পর চুল শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত দু বার এটা করুন। * যারা অ্যাজমা এবং কাশির সমস্যায় ভোগেন, তাদের তাৎক্ষণিক উপশমে পুদিনা পাতা বেশ কার্যকরী। খুব বেশি নিঃশ্বাসের এবং কাশির সমস্যায় পড়লে পুদিনা পাতা গরম জলে ফুটিয়ে সেই জলেরর ভাপ নিতে পারেন। ভাপ নিতে অসুবিধা হলে গার্গল করার অভ্যাস তৈরি করুন। 
* গোলাপ, পুদিনা, আমলা, বাঁধাকপি ও শশার নির্যাস একসঙ্গে মিশিয়ে টোনার তৈরি করে মুখে লাগালে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে। 
* পুদিনা পাতায় রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস, যা পেটের যে কোনও সমস্যার সমাধান করতে পারে খুব দ্রুত। যারা হজমের সমস্যা এবং পেটের ব্যথা কিংবা পেটের নানান সমস্যায় ভুগে থাকেন, তারা খাবার খাওয়ার পর ১ কাপ পুদিনা পাতার চা খাওয়ার অভ্যাস করুন। ৬/৭টি তাজা পুদিনা পাতা গরম জলে ফুটিয়ে মধু মিশিয়ে খুব সহজে পুদিনা পাতার চা তৈরি করতে পারেন ঘরের মধ্যেই। 
* গরমকালে শরীরকে ঠাণ্ডা রাখাতে পুদিনার রস খুব ভাল। গোসলের আগে জলের মধ্যে কিছু পুদিনা পাতা ফেলে রাখুন। সেই জল দিয়ে স্নান করলে শরীর ও মন চাঙ্গা থাকে। 
* এই পাতার রস ত্বকের যে কোনো সংক্রমণকে ঠেকাতে অ্যান্টিবায়োটিকের কাজ করে। শুকনো পুদিনা পাতা ফুটিয়ে পুদিনার পানি তৈরি করে ফ্রিজে রেখে দিন। এক বালতি পানিতে ১০-১৫ চামচ পুদিনার জল মিশিয়ে স্নান করুন। গরমকালে শরীর থেকে ব্যাকটেরিয়াজনিত বিশ্রী দুর্গন্ধের হাত থেকে রেহাই পেতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করে দেখতে পারেন। এতে ঘামাচি ও অ্যালার্জিও হবে না। 
* তাৎক্ষণিক যে কোনও ব্যথা থেকে রেহাই পেতে পুদিনা পাতার রস খুব উপকারী। মাথা ব্যথা হলে পুদিনা পাতার চা পান করতে পারেন। অথবা তাজা কিছু পুদিনা পাতা চিবিয়ে খেতে পারেন। জয়েন্টে ব্যথায় পুদিনা পাতা বেটে প্রলেপ দিতে পারেন। 

গাঢ় সবুজ ও হলুদ শাক-সবজি রাতকানা রোগ, হাঁড় ও দাঁত গঠনে এবং স্নায়ুবিক অসুস্থতায় বেশ উপকারী।

পালংশাক Spinach:
পালংশাকে যেমন প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘কে’, ‘এ’, ‘সি’, ‘বি২’ ও ফলিক অ্যাসিড থাকে, তেমনি ম্যাংগানিজ, ম্যাগনেসিয়াম ও আয়রনের গুরুত্বপূর্ণ উৎস। প্রতি ১০০ গ্রাম পালংশাকে ২৩ ক্যালরি, ৩ গ্রাম আমিষ, ৪ গ্রাম শর্করা ও ২ গ্রাম আঁশ থাকে, তবে কোনো চর্বি নেই।
পালংশাকে প্রচুর পানি থাকে। আর তাই রান্নার সময় পরিমাণটা একটু বাড়িয়ে নেবেন, পরে ভাগে যেন কম না পড়ে! পালংশাকে দ্রুত পচন ধরে। সংরক্ষণ করতে হলে বায়ুরোধী পলিব্যাগের ভেতর আঁটি খুলে ছড়িয়ে ফ্রিজে রাখতে পারেন। হিমায়িত করেও সংরক্ষণ করা যায়।
শীতকালীন সবজি হলেও বাজারে সারা বছর পালংশাক দেখা যায়। দ্রুত শক্তি ফিরিয়ে আনে পালংশাক। রক্তের গুণাগুণ বাড়ায়। পালংশাকের আয়রন লাল রক্ত কণিকা গঠনে সাহায্য করে, যা সারা দেহে অক্সিজেন সরবরাহ করে শরীরে শক্তি ফিরিয়ে আনে বলে জানালেন বারডেম জেনারেল হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ পুষ্টিবিদ শামসুন্নাহার নাহিদ।

•পালংশাকের চেয়ে বেশি ভিটামিন ‘কে’ সমৃদ্ধ সবজি খুঁজে পাওয়া কঠিন। হাড় সুরক্ষায় এই ভিটামিন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।
* অকাল অন্ধত্ব এবং রাতকানা রোধে পালংশাকের ভিটামিন ‘এ’ খুব কাজে দেয়।
* ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে এবং চুল পড়া রোধ করতেও পালংশাক কার্যকরী।
* ক্যানসার প্রতিরোধক ও প্রতিষেধক হিসেবে পালংশাক অপরিহার্য।
* আঁশসমৃদ্ধ খাবার হওয়ায় পালংশাক কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
* চিনি না থাকায় ডায়াবেটিক রোগীরা নিশ্চিন্তে পালংশাক খেতে পারেন।

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:
পালংশাকে প্রচুর অক্সালেট থাকে। কিডনির পাথরে অক্সালেট পাওয়া গেছে এমন কেউ বেশি পরিমাণে পালংশাক খাবেন না, পরিহার
করাই ভালো। এতে অক্সালিক অ্যাসিডের পরিমাণও বেশি। বেশি অক্সালিক অ্যাসিড ক্যালসিয়ামের মতো অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদান শুষে নেয়। হালকা রান্না করলে এই অ্যাসিডের পরিমাণ কমে যায় বলে ধারণা করা হয়।

কচুর শাক:

শাকসবজিপ্রেমী প্রায় সব ভোজনরসিকের কাছেই কচুশাক পরিচিত খাবার। ‘কচু’ কেবলই ‘কচু’ নয়, সর্বজন পরিচিত এ কচুর শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ, বি, সি ও ক্যালসিয়াম, ‍আয়রনসহ অন্যান্য পুষ্টিগুণ।প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণের যোগান ছাড়াও এ শাক বিভিন্ন রোগের পথ্য হিসেবেও ভূমিকা রেখে আসছে। পর্যাপ্ত অাঁশ থাকায় কচু শাক মনুষ্যদেহের পরিপাকতন্ত্রের প্রক্রিয়ায়ও কার্যকর ভূমিকা রাখে। কচু শাক ছাড়াও এর মাটির নিচের অংশটিতেও (কচুমুখী) রয়েছে স্বাস্থ্যকর পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ উপাদান। স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও রোগ প্রতিরোধে কচুশাকেরও জুড়ি নেই।

সাধারণত আমরা দু’ধরনের কচুশাক ভোজন করে থাকি। সবুজ কচুশাক ও কালো কচুশাক।
স্বাস্থ্যবিজ্ঞানের হিসাব মতে, প্রতি ১০০ গ্রাম সবুজ ও কালো কচুশাকে যথাক্রমে ১০,২৭৮ ও ১২,০০০ মাইক্রোগ্রাম ক্যারোটিন থাকে যা হলো ভিটামিন ‘এ’র উৎস।
অবর্ণনীয় সব পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ কচুশাকে আর কী থাকে এবারে তা দেখে নেওয়া যাক।

প্রতি ১০০ গ্রাম সবুজ কচুশাকে থাকে-
*৩.৯ গ্রাম প্রোটিন
*৬.৮ গ্রাম শর্করা
*১.৫ গ্রাম স্নেহ বা চর্বি
*২২৭ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম
*১০ মিলিগ্রাম লৌহ
*০.২২ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি-১ (থায়ামিন)
*০.২৬ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-২ (রাইবোফ্লেবিন)
*১২ মিলিগ্রাম ভিটামিন ‘সি’
*৫৬ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি

প্রতি ১০০ গাম কালো কচুশাকে থাকে-
*৬.৮ গ্রাম প্রোটিন
*৮.১ গ্রাম শর্করা
*২.০ গ্রাম চর্বি
*৪৬০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম
*৩৮.৭ মিলিগ্রাম লৌহ
*০.০৬ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-১ (থায়ামিন)
*০.৪৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-২ (রাইবোফ্লোবিন)
*৬৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি
*৭৭ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি

সবুজ কচু শাকের চেয়ে কালো কচু শাক অনেক বেশি পুষ্টিকর। প্রতি ১০০ গ্রাম কালো কচু শাকে ৬.৮ গ্রাম প্রোটিন, ৮.১ গ্রাম শর্করা, ২.০ গ্রাম চর্বি, ৪৬০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৩৮.৭ মিলিগ্রাম লৌহ, ০.০৬ মিলিগ্রাম ভিটামিনি বি-১ (থায়ামিন), ০.৪৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-২ (রাইবোফেবিন), ৬৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন ‘সি’ ও ৭৭ কিলোক্যালোরি খাদ্যশক্তি রয়েছে। দেহের পুষ্টি সাধনে এসব পুষ্টি উপাদানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

লালশাক:
আমাদের দেশে লাল শাক একটি জনপ্রিয় শাক। এর ইংরেজি নাম Red amaramth ও বৈজ্ঞানিক নামAnaranthus oleraceus. বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলেই কম বেশি লাল শাকের চাষ হয়। রান্নার পর শাকের রং গাঢ় লাল রঙ হয়। লাল শাক একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর খাবার। 
লাল শাকে প্রচুর ভিটামিন এ, বি, সি ও ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়।


কলমিশাক:

সস্তা ও সহজলভ্য কলমিশাকের রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, বি, সি, ক্যালসিয়াম, লোহা ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান। হেলেঞ্চা, থানকুনি, কচু ও পুঁইশাকের চেয়ে কলমিশাকে ভিটামিন বি-১ অর্থাৎ থায়ামিন রয়েছে পরিমাণে অনেক বেশি।

১০০ গ্রাম কলমিশাকে ১ দশমিক ৮ গ্রাম আমিষ, ৯ দশমিক ৪ গ্রাম শর্করা, শূন্য দশমিক ১৪ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-১, শূন্য দশমিক ৪ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-২ অর্থাৎ রিবোফ্লোবিন, ৪২ মিলিগ্রাম ভিটামিন-সি, ১০৭ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৩ দশমিক ৯ মিলিগ্রাম লোহা, ১০ হাজার ৭৪০ মাইক্রোগ্রাম ক্যারোটিন ও ৪৬ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি রয়েছে।

আসুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কলমিশাকের নানা উপকারিতা—

১. কলমিশাকে থাকা ভিটামিন বি-১ স্নায়ুতন্ত্রকে সবল ও স্বাভাবিক রাখে। দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি সাধনে সাহায্য করে।

২. কলমিশাকে অধিক পরিমাণে ক্যারোটিন থাকে। এ ক্যারোটিন থেকে আমাদের দেহে ভিটামিন-এ তৈরি হয়। চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে ভিটামিন-এ কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

৩. কলমি শাকে থাকা প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন-সি আমাদের দাঁত, মাড়ি ও পেশি মজবুত করে। এ ছাড়া ভিটামিন-সি সর্দি-কাশি ও ঠান্ডার হাত থেকে রক্ষা করে দেহে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

৪. কলমিশাকে থাকা ক্যালসিয়াম মানবদেহের হাড় ও দাঁত মজবুত রাখতে ভূমিকা পালন করে। গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়ের সুস্বাস্থ্যের জন্য কলমিশাক অত্যন্ত উপকারী।

৫. কলমিশাকের পাতা ও কাণ্ডে পর্যাপ্ত পরিমাণে আঁশ থাকে। আঁশ খাদ্য হজম, পরিপাক ও বিপাক ক্রিয়ায় সহায়তা করে। তাই নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে কলমিশাক খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় এবং শরীর সুস্থ থাকে।

৬. কলমিশাকের রস ঘিয়ের সঙ্গে মিশিয়ে সকাল ও বিকেলে দুবার খেলে প্রসূতি মায়ের বুকের দুধের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।

৭. কলমিশাকের দুই চামচ রস একটু গরম দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।

ডাঁটাশাক:

(Amaranth) Amaranthaceae গোত্রের Amaranthus গণের কয়েকটি প্রজাতি। আদি নিবাস ভারত উপমহাদেশে ও ইন্দোচীনে। শাক ও সবজি হিসেবে ব্যবহূত কচি পাতা ও কান্ড ভিটামিন ‘এ’ ও ‘সি’, ক্যালসিয়াম ও লৌহ সমৃদ্ধ। দুটি প্রধান ভ্যারাইটি: পত্রবহুল Amaranthus tricolor, সারা বছর থাকলেও শীতেই বেশি ফলন, আর কান্ডপ্রধান অন্য প্রজাতি। জন্মায় প্রধানত গ্রীষ্ম মৌসুমে। স্থানীয় জাতগুলিই বাংলাদেশে চাষ হয়। পত্রবহুল প্রজাতির দুটি ভ্যারাইটি আছে আলতাপরী ও BARI-লালশাক। কান্ডপ্রধান জাতের মধ্যে উল্লেখ্য বাঁশপাতা, কাটুয়া, সুরেশ্বরী ও আমনি। জাত অনুযায়ী ফলন হেক্টর প্রতি প্রায় ১৫ মে টন। রান্নায় কচি পাতা শাক হিসেবে এবং কান্ড সবজি হিসেবে মাছ ও অন্যান্য তরকারীর সঙ্গে খাওয়া যায়।

পুঁই শাক:

পুঁই ( Basella alba) এক প্রকার লতা জাতীয় উদ্ভিদ। পুঁই গাছের পাতা ও ডাঁটি শাক হিসেবে খাওয়া হয় বলে সচরাচর একে পুঁই শাক হিসাবে উল্লেখ করা হয়। অন্যান্য অনেক শাকের মত এর মধ্যে অনেক ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, লোহা, ও ক্যালসিয়াম আছে। এছাড়া ক্যালরির ঘনত্ব কম। তদুপরি ক্যালরি-প্রতি আমিষের পরিমাণও বেশী। এর মধ্যে ছিবড়ের পরিমাণ বেশী। পাতাসহ সমগ্র গাছ ভেষজ গুণাবলী সম্পন্ন। পাতা মূত্রকারক। গনোরিয়া রোগে এটি উপকারী। অর্শ রোগে অতিরিক্ত স্রাব, অতিসার প্রভৃতিতে অন্যান্য উপদানের সঙ্গে পুঁই শাকের ব্যবহার আছে। পুঁই শাকের পাতার রস ছোটদের সর্দি, কোষ্ঠবদ্ধতা প্রভৃতিতে উপকার দেয়। পুঁই শাকের রস মাখলে গোদে আরাম হয়।

লেটুসপাতা:

লেটুস পাতার বৈজ্ঞানিক নাম লাকটুসা স্যাটিজ এল। আমাদের দেশে ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এই লেটুস পাতা। এটি কাঁচা ও ভেজে সালাদ হিসেবে খাওয়া যায়। লেটুসপাতার রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। চলুন জেনে নেই-

লেটুসপাতা নিয়মিত খেলে বার্ধক্য আসে দেরিতে ত্বকের বলিরেখাও পড়ে দেরিতে। এ পাতায় সোডিয়াম ভিটামিন-বি ওয়ান, বি টু থ্রি শরীরের যে কোনো অঙ্গে পানি জমে যাওয়া রোধ করে।

লেটুসপাতায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও বিটা ক্যারোটিন আছে। এ দুটি উপাদান কোলেস্টেরলের অক্সিডেশনকে বাধা দেয় এবং কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে। ফলে রক্তের খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং হৃৎপিণ্ড ভালো থাকে।

ঠান্ডাজনিত অসুখ হাঁচি, কাশি, কফ, হাঁপানি ও ফুসফুসের ইনফেকশন দূর করতে সালাদে প্রতিদিন লেটুসপাতা খেতে পারেন।

লেটুসপাতা ভিটামিন কে এর উৎস। ভিটামিন কে হাড়ের মেটাবলিজম বাড়ায়। লেটুসপাতা দ্রুত হাড় ক্ষয় হওয়া থেকে শরীরকে রক্ষা করে।

ত্বকের কোথাও কেটে বা ছিঁড়ে গেলে এ পাতা থেঁতলে ব্যথার স্থানে লাগালে ব্যথা ভালো হয়ে যায়।

লেটুসপাতায় ক্যালরির পরিমাণ কম থাকে। ওজন সমস্যার সমাধানে এটি অনেক ভালো খাবার।

ডায়াবেটিক রোগীদের রক্তে চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে লেটুসপাতার গুরুত্ব অনেক বেশি।

লেটুসপাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। লেটুসপাতা হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করে। অ্যানমিয়া বা রক্তশূন্য রোগীদের জন্য লেটুসপাতা উত্তম খাবার।

লেটুসপাতার পুষ্টি উপাদান হাত-পা ফুলে যাওয়া, কিডনির পাথর, কিডনির কার্যহীনতা, মূত্রথলির ইনফেকশন ও কিডনির ব্যথায় লেটুসপাতা উপকারী।

লেটুসপাতা খুশকিরও কাজ করে। শ্যাম্পুতে লেটুসপাতা গুঁড়া ব্যবহার করা হয়। রোদে পোড়া ভাব দূর করতে লেটুপসাতা থেঁতলে ত্বকে দিলে ত্বকের উপকার হয়।

সবজির ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা:
শিম, মটরশুঁটি, বরবটি, পালংশাক, ফুলকপি ইত্যাদিতে পিউরিন বেশি থাকে বলে গেঁটেবাত হলে অবশ্যই বর্জন করা উচিত। আবার ওল, বেগুন খেলেও আমবাতের প্রকোপ বাড়ে।


অজীর্ণ ও ডায়রিয়া হলে সবজি বর্জন করা উচিত। বিশেষ করে আঁশযুক্ত সবজি। কারণ, সেলুলোজ দুষ্পাচ্য বলে হজমের ব্যাঘাত ঘটায়।

বাঁধাকপি, মুলা, শিম, শাক, মটরশুঁটি পরিপাকে অসুবিধা হয় বলে গ্যাসট্রাইটিস বেড়ে যায়। আলসারের রোগীদের খাবারে কাঁচা সবজি, পেঁয়াজ, বাঁধাকপি, ডাঁটা, কাঁচামরিচ, কাঁচা শসা, বরবটি বাদ দিলে ভালো হয়।

কিডনিতে পাথর হলে অক্সালিক এসিডযুক্ত সবজি যেমন: পালংশাক, পুঁইশাক, টমেটো, বিট, শজনেপাতা, কচু, কচুর শাক, কলার মোচা, মিষ্টি আলু বাদ দিতে হবে।


শিশুদের ক্ষেত্রে :
পাঁচ-ছয় মাসের শিশুদের গাঢ় সবুজ ও হলুদ সবজি সিদ্ধ করে চালুনি দিয়ে চেলে নরম করে ক্বাথ বের করে খাওয়ানো যেতে পারে।


শিশুর জন্মের পর মায়েদের গাজর, বিট, টমেটো, লেটুসপাতা, বাঁধাকপি, মুলা খাওয়া উচিত। এতে মুখে যে কালো ছোপ পড়ে তা দূর হয়ে যায়। পাকা করলার বীজ শুকিয়ে গুঁড়ো করে সাত-আট চা-চামচ পানি মিশিয়ে ছেঁকে খেতে হবে। কিছুদিন খেলে ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের অভাব হবে না।

মানবদেহের রোগ ও অভাবজনিত উপাদান সমূহের নাম:

রোগের নাম                                                      অভাবজনিত উপাদান 


ডায়বেটিস-------------------------------------------ইনসুলিন 
গলগন্ড ----------------------------------------------আয়োডিন 
টিটেনি-----------------------------------------------ক্যালসিয়াম 
দাঁতের ক্ষয়রোগ------------------------------------ফ্লুরাইড 
হাইপোগ্লাইসোমিয়া --------------------------------রক্তের গ্লুকোজ 
রাতকানা ------------------------------------------- ভিটামিন-এ(A) 
বেরিবেরি   ------------------------------------------ ভিটামিন-বি(B1) 
পেলেগ্রা -------------------------------------------   ভিটামিন-বি৩(B3) 
স্কার্ভি  ------------------------------------------------ ভিটামিন-সি(C) 
রিকেট ----------------------------------------------- ভিটামিন-ডি(D) 
প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস ------------------------------- ভিটামিন-ই(E) 
অধিক রক্তক্ষরণ -----------------------------------ভিটামিন-কে(K)


কোন শাক-সবজিতে কোন ভিটামিন বেশি পরিমাণে পাওয়া যায় 


ভিটামিন                শাক-সবজি

ভিটামিন - ‘এ’লালাশাখ, লাউ, লেটুস, পুঁইশাখ, পালংশাখ, বাঁধাকপি, টমেটো, গাজর, পেঁপে, সজিনা, কচু, মিষ্টি কুমড়া, বেগুন
ভিটামিন - ‘বি’শিম জাতীয় সবজি
ভিটামিন - ‘সি’কাঁচামরিচ, শিম, মূলা, বাঁধাকপি, গাজর, টমেটো, পালংশাক, সাইট্রাস ফল, আমলকি, পেয়ারা
ভিটামিন - ‘ডি’সবুজ শাক-সবজি
ভিটামিন - ’ই’বাঁধাকপি, লেটুস
খনিজ লবণসবুজ পাতা জাতীয় শাকসবজি
ক্যালশিয়ামনটেশাক, মেথিশাক, পালংশাক, বকফুল, মূলা, বেগুন
আয়রনকরলা, কাঁকরোল, কাঁচকলা, কচুশাক, পেঁয়াজ, টমেটো, গাজর
আয়োডিনকাঁকরোল, স্কোয়াশ, ঢেঁরশ, পেঁয়াজ
প্রোটিনশিম, বরবটি, মটরশুঁটি
বিভিন্ন ফলের পুষ্টিগুণ:
খনিজ লবণ ছাড়াও আমাদের শরীরের স্বাভাবিক সুস্থতা রক্ষায় প্রয়োজন ভিটামিন। এই ভিটামিন আবার এ, বি, সি, ডি, কে এবং ই ইত্যাদি নামে পরিচিত। দেশী ফলে এসব ভিটামিন প্রচুর রয়েছে। সাধারণ দেশীয় ফল, যেমন- কলা, পেঁপে, পেয়ারা, বেল, আম, জাম, কাঁঠাল প্রভৃতি বিটামিন সমৃদ্ধ ফল। এ রচনায় দেশী-বিদেশী পাঁচটি ফলে ভিটামিন ও খনিজ লবণের উপস্থিতি ও উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।


আপেল :
আপেল পুষ্টিকর ও সুস্বাদু ফল। এটি শরীর থেকে বিষাক্ত ও ক্ষতিকর পদার্থ বের করে দেয়। ভিটামিন ‘এ’ এবং ‘বি১’ বা থায়ামিনে ভরপুর। আরো আছে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়াম ইত্যাদি। আছে টার্টারিক অ্যাসিড, যা শরীরে জীবাণু সংক্রমণ প্রতিরোধ করে, আর এটি যানবাহনে ভ্রমণকালীন বমি প্রতিরোধে সহায়তা করে। আপেলে আছে ‘পেকটিন’ যা পাকস্থলীকে সুস্থ রাখে। বলাবাহুল্য, পেয়ারাতেও আছে প্রচুর পেকটিন। আপেলের রস যকৃৎ, গলব্লাডার বা পিত্তথলী ও ফুসফুসের স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক।


আঙ্গুর :
এতে আছে পটাশিয়ামে ক্লোরাইড নামক খনিজ লবণ যা শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে এবং রক্তকে বিশুদ্ধ করে। এটি যকৃৎ ও কিডনিজনিত রোগ প্রতিরোধ করে। কালো আঙ্গুর অ্যানিমিয়ায় উপকারী। কিশমিশ বা শুষ্ক আঙ্গুর লৌহ, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম ও আয়রন সমৃদ্ধ।


কমলা :
কমলার উপকারিতা এক কথায় বলে শেষ করা যায় না। এটি ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ ফল যা আমাদের শরীরের রক্তনালীতে শক্ত ও সুদৃঢ় করে। স্বার্ভি রোগ প্রতিরোধ করে। এতে আরো থাকে পেকটিন, যা শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয় এবং রক্তের কোলস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। এটি হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক প্রতিরোধে সহায়তা করে এবং শরীরের তারুণ্য ধরে রাখে। চামড়া মসৃণ ও কমনীয় করে। সাধারণ জ্বর, সর্দিকাশি, ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রতিরোধ করে যেহেতু এতে আছে ভিটামিন সি। তবে এটি ভিটামিন ‘এ’ তে পরিপূর্ণ তাই দৃষ্টিশক্তির বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। প্রতিরোধ করে সাধারণ প্রদাহ, আর্থ্রারাইটস, ক্যান্সারসহ উচ্চ রক্তচাপ ও হার্টের অসুখ। কারণ এতে আছে পটাশিয়াম, ও হাটের অসুখ। কারণ এতে আছে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফলিক অ্যাসিডসহ এন্টিঅঙিড্যান্ট। এ এন্টিঅঙিড্যান্ট আবার বৃদ্ধ বয়সে স্মৃতি ভ্রংশজনিত রোগ যেমন- পারকিনসন্স অ্যালঝাইমার প্রতিরোধ করে।


ডাব :
এটি সর্বপ্রথমে একটি জীবাণুমুক্ত বিশুদ্ধ পানি। এতে আছে প্রচুর পটাশিয়াম, তাই উচ্চ রক্তচাপের রোগীর জন্য এটি নিরাপদ। কারণ দৈনন্দিন সাধারণ খাবার লবণ সোডিয়াম, ক্লোরাইড (ঘধপষ)। উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য হুমকিস্বরূপ। এ ছাড়া ছোট শিশুদের ডায়রিয়া, কলেরা প্রতিরোধ করে তাদের শরীরে প্রয়োজনীয় পানির অভাব পূরণ করে এবং স্যালাইনের বিকল্প হিসেবে কাজ করে। হাঁপানির রোগীর জন্যও ডাবের পানি নিরাপদ ও উপকারী।


আখ :
আখে রয়েছে সুক্রোজ, যা শরীর সহজে গ্রহণ করতে পারে। তাই সুস্থ শরীরে এর রস পান করলে তাড়াতাড়ি শক্তি পাওয়া যায়। এটি জণ্ডিসে ভীষণ উপকারী। তবে আখের রসের চেয়ে ৩০ গুণ বেশি পুষ্টি আছে আখের গুড়ে। এতে আরো আছে ক্যালসিয়াম ‘বি’ ভিটামিন এবং আয়রন। ম্যাগনেশিয়াম, খনিজ থাকাতে এটি হজমে সহায়ক এবং কোষ্ঠকাঠিন্য রোগে উপকারী। তবে ইদানীং কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বিষাক্ত হাইড্রোজ মিশ্রিত করে গুড় বিক্রয় করছে বিধায় সরাসরি আখ খাওয়াই উত্তম।

কাঁচা পেঁপে পরিপাক শক্তির সহায়ক। আঁশজাতীয় ফলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আঁশ থাকে বেল, পেয়ারা, কতবেল, আমড়া, আতা, নারিকেল ও কালোজাম। এছাড়া গাব, কামরাঙা, পাকা টমেটো, পাকা আম, পাকা কাঁঠাল, আপেল ও আমলকীর মধ্যে মাঝারি পরিমাণে আঁশ থাকে।

বিভিন্ন মসলার পুষ্টিগুণ:
হলুদ : এটি প্রদাহ নিবারক ভেষজ মসলা। যকৃতের সুস্থতায় ক্যান্সার প্রতিরোধে, ঋতুকালীন, ব্যথা কমাতে হলুদ কাজে লাগে। এটি একটি ভালো এন্টিসেপটিক।

কাঁচা মরিচ : এতে আছে ভিটামিন ‘সি’ এবং এন্টি অঙিড্যান্ট’ শরীরের বিভিন্ন ব্যথা প্রতিরোধ করে।

আদা : পেট ফাঁপা বন্ধ করে। বমি বন্ধ করে। হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। সাধারণ ঠাণ্ডা ও শ্লেষ্মা দূর করে। আদা চা পান করলে গলার ব্যথা দূর হয়।

মেথি : মেথি ও মেথি শাক ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে। এটি শরীরের স্নিগ্ধতা রক্ষা করে থাকে এবং একটি ভেষজগুণ সম্পন্ন মসলা। পাঁচ ফোঁড়নের একটি অন্যতম উপাদান হলো মেথি। এটি চুলের সৌন্দর্য বর্ধক। এটি উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধ করে।

গরম মসলা : বিভিন্ন মসলাকে একত্রে গরম মসলা বলা হয়। এর মধ্যে লবঙ্গ কণ্ঠনালীর প্রদাহ দূর করে এবং টনসিল কমানোয় সহায়তা করে। এলাচ হজমে সহায়তা করে ও মুখের দুর্গন্ধ দূর করে। চারুচিনি পেট ফাঁপায় আরাম দেয় এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।


তুলসীপাতা: গলাব্যথা ও সর্দি-কাশির জন্য তুলসীপাতার রস খুবই উপকারী। 

সুতরাং সবজি শুধু স্বাদ ও পুষ্টির জন্য নয়। এর বিষয়ে ভালোভাবে জেনে শরীরের প্রয়োজন-অপ্রয়োজনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তবেই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এর স্থান দিতে হবে।

বিভিন্ন ভিটামিনের কাজ:

ভিটামিন এ
চোখচুল এবং ত্বকের জন্য খুবই ভালো। কোন কোন খাবারে আছে- দুধগাজরমিষ্টি আলুমিষ্টি কুমড়াআমলালশাকসব রকমের সবুজ শাকসবজিকড লিভার অয়েলযকৃতপালংশাকরঙিন শাকসবজিচিজঅ্যাপ্রিকটডিমপেঁপেমটরশুঁটি।


ভিটামিন বি
হজম প্রক্রিয়া ঠিক রাখতে সাহায্য করে। ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। কোন কোন খাবারে আছে

মাছযেকোনো রকমের সি ফুডমাংসশস্যদানাডিমডেইরি প্রডাক্ট এবং সবুজ শাকসবজি।


ভিটামিন সি
শরীরের বিভিন্ন টিস্যু ভালো রাখতে সাহায্য করে। শরীরের সেরে ওঠার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

কোন কোন খাবারে আছে?
কমলা, লেবু, স্ট্রবেরি, টমেটো, কাঁচামরিচ, ব্রকলি, ফুলকপি, কিউই ফল, গাজর, পেঁপে, আনারস, আঙুর, আম, জাম, আলু, তরমুজ, কলা, পেঁয়াজ, চেরিফল, পেয়ারা, কিশমিশ, লেটুসপাতা, বেগুন, ডুমুর।


ভিটামিন ডি
দাঁত ও হাড়ের গঠনের জন্য জরুরি। দাঁত ও হাড় মজবুত করার জন্য খুবই উপকারী। এছাড়া শরীরের ক্যালসিয়াম শোষণে সহায়তা করে। কোন কোন খাবারে আছে দুধমাছডিমের কুসুমযকৃতফর্টিফায়েড সিরিয়াল।


ভিটামিন ই
ফুসফুসকে রক্ষা করে এবং শরীরের টিস্যু গঠনে সহায়তা করে। ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী।

কোন কোন খাবারে আছে

শস্যদানাসবুজ শাকসবজিডিমের কুসুমবিভিন্ন ধরনের বাদামসূর্যমুখীর তেলমিষ্টি আলুমিষ্টি কুমড়ার বীজপাম অয়েল।


ভিটামিন কে
কোথাও কেটে গেলে রক্ত জমাট বাঁধতে সহায়তা করে। কোন কোন খাবারে আছে সবুজ শাকসবজিডেইরি প্রোডাক্টব্রকলিসয়াবিন তেলপুঁইশাকবাঁধাকপিপার্সলেলেটুসপাতাসরিষা শাক।

বিভিন্ন খনিজ:
শরীরের পুষ্টিসাধন এবং নিয়মিত ও সুষ্ঠু বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন সুষম খাদ্য। সুষম খাদ্যে থাকে ৬টি উপাদান। যথা : (১) আমিষ বা প্রোটিন, (২) শর্করা বা শ্বেতসার, (৩) স্নেহ বা তেলজাতীয় খাদ্য, (৪) ভিটামিন, (৫) খনিজ লবণ এবং (৬) পানি। প্রোটিন, শ্বেতসার আর স্নেহ পদার্থ আমাদের শরীরের বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য অবশ্য প্রয়োজনীয় এবং এরা আমাদের শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করে থাকে। কিন্তু শরীরের রোগ প্রতিরোধে, শরীরের ক্ষয় বা ঘাটতি পূরণে, দীর্ঘকালীন রোগভোগের সময়, দৈনন্দিন খাদ্য গ্রহণে অনীহা দূরীকরণে এবং শরীরকে কর্মোময় ও প্রাণবন্ত রাখতে আমাদের প্রয়োজন হয় কিছু খনিজ লবণ ও ভিটামিন তথা খাদ্য প্রাণের।


আর এসব ভিটামিন ও খনিজ লবণ আমাদের সহজেই সারাসরি গ্রহণ করতে পারি বিভিন্ন ফলমূল, শাকসবজি ও বিভিন্ন সুগন্ধি মসলাজাতীয় দ্রব্যের মাধ্যমে। বাজারে ওষুধ আকারে বিভিন্ন খনিজ লবণ সমৃদ্ধ ও ভিটামিন ওষুধ কিনতে পাওয়া যায়। তবে আমাদের দেশীয় বিভিন্ন ফল ও শাকসবজি গ্রহণের মাধ্যমে এসব ভিটামিন ও খনিজ লবণ অতি সহজে, সুলভ মূল্যে গ্রহণ করাই বাঞ্ছনীয়। কারণ শাকসবজি ও ফলমূল সরাসরি গ্রহণ করলে শরীরের পুষ্টি ও উপকারিতা বেশি পাওয়া যায়।

খনিজ লবণ: ক্যালসিয়াম সর্বাধিক পরিচিত ও গুরুত্বপূর্ণ একটি খনিজ লবণ। ক্যালসিয়াম আমাদের হাড় ও দাঁতের গঠন মজবুত ও শক্তিশালী করে, ক্ষয়রোধ করে এবং আর্থ্রারাইটিস, বাতজাতীয় রোগের সাথে লড়াই করে। একলামশিয়া বা খিচুনি প্রতিরোধের জন্য ক্যালসিয়ামের অবদান অনস্বীকার্য।

ফসফরাস: ফসফরাসের কাজও অনুরূপ। কৃষক ভাইয়েরা, আপনারা যারা জমিতে ফসলের শিকড় বৃদ্ধি ও গাছের দৃঢ়তা বৃদ্ধির জন্য ফসফরাস জাতীয় সার টিএসপি ব্যবহার করে থাকেন, তারাও জেনে রাখুন যে মানুষের শরীরের দৃঢ়তা বৃদ্ধির জন্য, ফসফরাস অনুরূপ কার্যকারিতা দিয়ে থাকে। পার্থক্য শুধু আমরা বিভিন্ন ফলমূল, শাকসবজির মাধ্যমে ফসফরাস খুব সহজে গ্রহণ করতে পারি। আর এ জন্য প্রয়োজন আমাদের সদিচ্ছা। দৈনন্দিন সুষম খাদ্য গ্রহণের ক্ষেত্রে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।

আয়রন: বা লৌহ হলো এমন একটি জীবন রক্ষাকারী খনিজ যা, শরীরের রক্তস্বল্পতা দূর করে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়ের রক্তশূন্যতা বা এনিমিয়া দূর করার জন্য আয়রন।

আয়োডিন: এটি শরীরে খুবই সামান্য পরিমাণে দরকার হয় কিন্তু এর প্রভাব অপরিসীম। আয়োডিন থাইরয়েড গ্রন্থিকে সুস্থ সবল রাখে। এটি গলগণ্ড, দুর্বলতা, স্তন ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে থাকে। কডলিভার অয়েল, বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ, আয়োডিন মিশ্রিত খাবার লবণ হতে খুব সহজেই আয়োডিন পাওয়া যায়। কডলিভার অয়েলে আয়োডিন ছাড়াও আছে একটি মূল্যবান উপাদান ভিটামিন ‘এ’ যা অন্ধত্ব ও রাতকানা প্রতিরোধ করে। এ ছাড়া আরো আছে ক্যালসিয়াম, যা শিশুদের হাড় ও দাঁত মজবুত করে।

Comments

Popular posts from this blog

ঢাকার কোথায় কি পাওয়া যায়?

গবাদি পশুর রোগ ও তার প্রতিকার

কৃষি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহ

মুসলিম জীবনের আদব-কায়দা