দেশি মাছ
আসুন বাংলাদেশের কিছু মাছ চিনি (প্রথম পর্ব)
আসুন বাংলাদেশের কিছু মাছ চিনি (প্রথম পর্ব)
আমরা বাঙালি। আমাদেরকে এক সময় বলা হত, 'মাছে ভাতে বাঙালি'। কিন্তু এই দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতির বাজারে মাছের মূল্যেরও উর্ধ্বগতি আজ আমাদের এই বৈশিষ্ট্যকে ইতিহাসে পরিণত করেছে। এক সময় মাছ ছিলো বাঙালির প্রতিদিনের খাদ্য। কিন্তু আজ অনেকে আমাদের দেশী অনেক মাছই চেনে না। বাংলাদেশের মাছ নিয়ে তাই লিখতে বসেছি এই ব্লগ।
খলিশাঃ খলিশা মাছ বাংলাদেশের সর্বত্র পাওয়া যায়। গ্রামে-গঞ্জে যারা থাকেন তারা এই মাছ খুব ভালই চেনেন। তাই খাল-বিল বা ডোবায় জন্ম নেয় এই মাছ। খলিশা মাছের দেহের উপরিভাগ সবুজাভ এবং দেহ ডোরাকাটা। খলিশা মাছের প্রধান খাদ্য হলো, মশার শুক ও মূককীট। তাই মশা নিয়ন্ত্রণে খলিশা মাছের ভূমিকা অপরিসীম। এ ছাড়াও এদের খাদ্য তালিকার বড় অংশ জুড়ে রয়েছে শ্যাওলা বা অ্যালগী (algae)। এরা ডিম পাড়ার মাত্র ১৪-১৫ ঘন্টার মধ্যে পোনা নির্গত হয়।
ছবিঃ
আইর মাছঃ প্রায় ফুটখানেক লম্বা আঁশবিহীন মাছ। মিঠা পানি ও সমুদ্র তীরবর্তী লোনা পানিতে জন্ম নেয়। তাই সারা বাংলাদেশেই এই মাছ প্রচুর পরিমানে পাওয়া যায়। বড়শি দিয়ে এই মাছ ধরা খুব সহজ। এরা এদের চেয়ে ছোট মাছ ও বিভিন্ন জলজ পোকা মাকড় খেয়ে জীবন ধারণ করে। তাই মাছের চাষ করতে গেলে আইর মাছ পুকুরে রাখা বিপজ্জনক। কারণ, এরা পোনা মাছ খেতে পছন্দ করে।
ছবিঃ
টেংরাঃ টেংরা মাছ আমাদের দেশের অতি পরিচিত মাছগুলোর একটি। যেহেতু দেশী মাছ নিয়ে এই ব্লগ, তাই টেংরাকে বাদ দেয়া চলে না। এই মাছ বাংলাদেশের সর্বত্র পাওয়া যায়। এই মাছের ভর্তা খেতে দারুণ মজা! এই মাছ কর্দমাক্ত ও আগাছাযুক্ত জলাশয়ে পাওয়া যায়। বর্ষাকালে এই মাছ বাজারে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এই মাছ একুরিয়ামেও রাখা যায়।
ছবিঃ
ঘুংগাঃ ঘুংগা নামের এই মাছকে কাবাশী ট্যাংরাও বলা হয়। এরা দেখতেও ট্যাংরার মতই। তবে পেটের দিক হলুদাভ। খেতে অতি সুস্বাদু এই মাছ বাংলাদেশের সর্বত্র পাওয়া যায়। জাল ও বড়শি দ্বারা এই মাছ প্রচুর পরিমাণে ধৃত হয়।
ছবিঃ
জুংলাঃ অনেকটা অপরিচিত মাছ। ৬ ইঞ্চি দৈর্ঘের এই মাছের পিঠের পাখনা দেহের উচ্চতা হতে দীর্ঘতর। হালকা ধূসর বর্ণের। বক্ষদেশের কাঁটা ভেতরের দিকে খাঁজ কাটা থাকে।
ছবিঃ
রিটাঃ পায় এক ফুট দীর্ঘ এই মাছ স্বাদু ও লোনা পানিতে পাওয়া যায়। এই সুস্বাদু মাছের গাত্রবর্ণ সবুজাভ বাদামী। এরা ঘোলা পানিতে বেশী থাকে। (ঘোলা পানিতে মাছ শিকার কথাটা এদের থেকেই এসেছে কি?) এরা পোকা মাকড় ও অন্য মাছ খেয়ে জীবন ধারন করে। পোনা অবস্থায় বিভিন্ন জলজ উদ্ভিদের মূল খেয়ে বেঁচে থাকে।
ছবিঃ
কাকিয়া, কাইক্কা বা কাক্লিঃ এদের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল, দীর্ঘ চোঙ্গার মত দেহ এবং এর উভয় চোয়ালের অতি দীর্ঘকার ঠোঁট ও তাতে তীক্ষ্ণ দাঁতের সমাবেশ। সাধারণত নদীতে ও খালে এবং বর্ষাকালে সর্বত্র দেখা যায়। এদের পিঠের দিকটা কালচে ধূসর ও বুকের দিকে সাদা। এরা পেটুক ধরণের; ক্ষুদ্রাকার মাছ খায়।
ছবিঃ
চান্দাঃ অনেকটা গোলাকার ও সূক্ষ্ণ আঁশ যুক্ত। দুই পাশ উজ্জ্বল রূপালী। এরা পরিষ্কার পানিতে থাকতে পছন্দ করে, নদী, নালা, খাল, বিল সর্বত্র এদের দেখা মেলে। প্রায় ২ ইঞ্চি দীর্ঘ, দেহের বর্ণ হলুদাভ সাদা। এরা দিনে ১২০ টার মত মশার শুককীট ও মূককীট খেতে পারে। তাই মশা নিধনে এই মাছ কাজে লাগতে পারে।
ছবিঃ
ইলিশ মাছঃ বাংলাদেশের জাতীয় মাছ। তাই এই মাছ সবাই চেনে। এরা প্রকৃতপক্ষে লোনা পানির মাছ। তবে ডিম পাড়ার সময় হলে এরা নদীতে চলে আসে। মে-অক্টোবর মাসে ইলিশ মাছে বেশী পাওয়া যায়। রূপালী রঙের এই মাছ বাংলাদেশে একসময় প্রচুর পাওয়া যেত। তবে ইদানিং এই মাছ দুর্লভ হয়ে উঠছে।
ছবিঃ
চাপিলা, খয়রাঃ এরা দেখতে ছোট আকারের ইলিশ মাছের মত। ৪/৫ ইঞ্চি, রূপালী গাত্র বিশইষ্ট মাছটির ঘাড় ও পিঠ কালো ভাবাপন্ন। লেজ দ্বিধাবিভক্ত। এরা প্রধানত নদী-নালার মাছ, যদিও বর্ষাকালে বিল ও খালে ছড়িয়ে পড়ে। এরা পানির উপরের দিকে থাকে।
ছবিঃ
কান পোনা, সুবর্ণ খরিকাঃ বাংলাদেশের এই ক্ষুদ্রাকার মাছের পেটের দিক রূপালী ও পিঠের দিকে গভীর ধূসর এবং পিঠ কালো ব্যান্ড যুক্ত। এদের সাধারাণত পুকুরে ও ডোবায় এবং কিছু কিছু নদীতেও পাওয়া যায়। খাদ্য হিসেবে ব্যবহারের চেয়ে এদের মাছ ধরার টোপ হিসেবে বেশী ব্যবহার করা হয়।
ছবিঃ
ফাসা, ফেউয়া বা ফেউসাঃ ৭-৮ ইঞ্চি দৈর্ঘ বিশিষ্ট, লম্বাভাবাপন্ন, পৃষ্ঠদেশ সবুজাভ বর্ণযুক্ত এবং পেটের দিক সোনালী ভাব। পেটের দিকে দীর্ঘায়ীত ডানা রয়েছে। এই মাছ সর্বত্র প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। যদিও এই মাছ কন্টকপূর্ণ তথাপি এটা জনপ্রিয়। ডিম ছাড়ার সময় হলে এরা নদীপথে উজানের দিকে চলতে থাকে।
ছবিঃ
রুইঃ রুই মাছ বহুল প্রচলিত মাছগুলোর মধ্যে একটি। এই মাছের পেটের দিকে রূপালী সাদা এবং পিঠ ও পিঠের কাছাকাছি অংশ কালচে ভাবাপন্ন। ২০-৩০ ইঞ্চি ও ততোধিক দৈর্ঘ বিশিষ্ট এই মাছ বাংলাদেশের সবখানে পাওয়া যায়।
ছবিঃ
মৃগেল মাছঃ মৃগেল মাছের অন্যান্য বাংলা নাম হলো, মিরকা, মিরগা ইত্যাদি। কিছুটা রুই মাছের মত দেখতে, কিন্তু আনিপাতিক হারে দীর্ঘ ও সরু দেহ, ছোট মাথা, ছোট মুখ, উজ্জ্বল রূপালী দেহ এবং লালচে দানা এদের প্রধান বৈশিষ্ট্য। এদের মুখ কিছুটা নিচের দিকে স্থাপিত এবং সম্ভবত এ কারণে তারা পুকুরের নিচের দিকের তলানির খাদ্যসমূহ খেতে পারে। পরিণত বয়সের মাছ দুই লক্ষের অধিক ডিম দেয়।
ছবিঃ
কালবাউশ বা কালিবাউশঃ বাংলাদেশের কোথাও কোথাও এরা বাউশ, কালাঘনি, কালবাসু ইত্যাদি নামেও পরিচিত। কালচে দেহ ও ছোট নিম্নমূখী মুখ এদের বৈশিষ্ট্য। তাই মৃগেল মাছের মত এরাও পুকুরের নিচ এলাকার খাদ্য খেয়ে থাকে। নদী, নালা, খাল, পুকুর সর্বত্র এই মাছ ভালো জন্মে। বর্ষাকালে অগভীর পানিতে ডিম ছাড়ে।
ছবিঃ
ঘইন্যা, ঘনিয়া, গণি বা কুর্চিঃ রুই এর মত দেখতে এই মাছের প্রধান বৈশিষ্ট্য সামান্য সবুজাভ পৃষ্ঠ, রূপালী পেট ও আঁশের প্রান্তবর্তী কালচে দাগ। এই মাছ মূলত নদীর মাছ এবং কদাচিৎ দেখা যায়। এদের খাদ্যাভ্যাস অনেকটা মৃগেল ও কালবাউশের মত। এদের বর্শি দ্বারা ধরা যায়। এদের পিঠের ডানা অনেকখানি বিস্তৃত।
ছবিঃ
নন্দিনাঃ এই মাছ নন্দিল বা নন্দি নামেও পরিচিত। দেখতে প্রায় ঘনিয়া মাছের মত। এদের পিঠের দিকে ঘন সবুজাভ বর্ণ যা ক্রমশ নিচে এসে সাদায় পরিণত হয়েছে। কোন কোন আঁশের গায়ে কমলাভ লাল বর্ণ দেখা যায়। যদিও নদী নালার মাছ তবে পুকুরেও জন্মে। ঠোঁট পুরু ও কাটা। সাধারণত ১-২ ফুট লম্বা হয়।
ছবিঃ
বাটা বা খর্কি বাটাঃ এরা মৃগেল গণভুক্ত। কিন্তু আকারে অনেক ছোট। ৬-১২ ইঞ্চি হয়ে থাকে দৈর্ঘে। মলিন রূপালী, পেটের দিকটা সাদাটে। এরা নদীর মাছ এবং শামুক জাতীয় প্রাণি খেয়ে জীবন ধারন করে।
ছবিঃ
সরপুঁটি, সরালপুঁটি, স্বর্ণপুঁটি বা শের পুঁটিঃ এই মধ্যম হতে ছোট আকারের মাছ নদী, খাল ও পুকুরে দেখা যায়। এদের পৃষ্ঠভাগ কালচে ও মাথার কাছে সোনাল প্যাঁচযুক্ত এবং পেট সাদা। দৈর্ঘ ৫-১২ ইঞ্চি।
ছবিঃ
পুঁটিঃ বিভিন্ন পুঁটির মাঝে এটা প্রধান এবং বাংলাদেশের সর্বত্র প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এই মাছ তেলে কড়া ভাবে খেতে চমৎকার, এর দেহ রূপালী ও পিঠের কাছে ধূসরাভ। মাথার কাছে দেহে একটি ধূসরাভ, লালচে পোঁচ দেখা যায়। দৈর্ঘে ১-৩ ইঞ্চি এবং পুকুরে, খালে, বিলে দেখা যায়। এরা মশা ও অন্যান্য কীটের শুককীট ও উদ্ভিজ পদার্থ খেয়ে জীবন ধারণ করে।
ছবিঃ
ফুটানী পুঁটিঃ পুঁটি হতে ছোট ১.৫-২.৫ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়। এই মাছ বেশ চটপটে ও সবসময় ওঠানামা করতে থাকে। এর বর্ণ ময়লা সাদা, লেজের গোড়া থেকে সামান্য ভেতরে এক ধরনের কালো এলাকা দেখা যায়।
ছবিঃ
তিতপুঁটিঃ সবচেয়ে ছোট আকারের পুঁটি মাছ। মাত্র ১.৫ থেকে ২ ইঞ্চি লম্বা। রূপালী রঙের দেহে দুটি কালো ফোঁটা থাকে। নদী, নালা, খাল, বিল, পুকুর, ডোবা সর্বত্র পাওয়া যায়।
ছবিঃ
ঢেলা, মাউয়া, কোটি বা গুনতাঃ এটি নদী-নালা, ও বিল-ঝিলের মাছ। বাংলাদেশের সর্বত্র পাওয়া যায়। এদের আকৃতি চৌকনা ধরনের, মাথা চাপা, মুখ ছোট, ঠোঁট পাতলা, পিঠের দিকে উঁচু। দেহ রূপালী কিন্তু পৃষ্ঠভাগ কালো এবং ডানা বা পাখনা সবুজাভ। এই মাছটিও মলার মত ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ বলে কথিত।
ছবিঃ
চেলা, বনস্পতি বা কাটারিঃ এটি ছোট, দীর্ঘাকৃতি ২-৪ ইঞ্চি দীর্ঘ মাছ। এগুলো উপরের স্তরের খাদক এবং শুককীট নাশক হিসেবে পরিগণিত। এগুলো নদী, বিল ও বন্যা প্লাবিত খালে পাওয়া যায়।
ছবিঃ
বাইলা, বেলে, বেলিয়া, ভালিয়াঃ এই ছোট হতে মাঝারী আকারের মাছ কিছুটা চোংগা আকৃতির। মাথার প্রায় পিছন দিকের কাছাকাছি চক্ষুযুক্ত মাছটি হলুদাভ-ধূসর বর্ণবিশিষ্ট ও প্রায় হাড় বিহীন ও মোলায়েম। এটি বিভিন্ন শ্রেণীর শৈবাল থেকে শুরু করে ছোট পোকা মাকড় ও মাছকে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। এগুলো সাদু ও লোনা উভয় প্রকার পানিতেই পাওয়া যায়। এই মাছ সাদু পানি থেকে লোনা পানিতে গিয়ে ডিম পাড়ে। এই মাছ বড়শি দ্বারা ধৃত হয় এবং ছোট চিংড়িকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
ছবিঃ
বাইমঃ এই মাছ দীর্ঘ ও খানিকটা চোংগাকৃতি, ১০-১৫ ইঞ্চি লম্বা, সবুজাভ দেহ-বর্নযুক্ত ও সুস্বাদু। পিঠের দিকে জলপাই-সবুজাভ ও নিচের দিকে সাদাটে। দেহের পাশে বহু ধূসরাভ সাদা স্পট দেখা যায়। এটি নদী-নালা ও খালের পরিষ্কার ও ঘোলাটে উভয় প্রকার পানিতেই বাস করে। এরা শ্যাওলা, মাটি, ছোট মাছ ও উদ্ভিদ ইত্যাদী খেয়ে জীবন ধারন করে। এদের দিম আঠার মত কোন কিছুকে অবলম্বন করে আটকে থাকে।
ছবিঃ
বামঃ এরা দেখতে বাইমের মত এবং বাইমের গণভুক্ত কিন্তু আকারে অনেক বড়; ১৫-২৫ ইঞ্চি দীর্ঘ। বাদামী বর্ণে, পৃষ্ঠ এলাকায় ও পাশে গভীর বাদামী স্পট ও ডোরা দেখা যায়। ডানা লেজের কাছাকাছি বিস্তৃত এবং বিভিন্ন প্রকার স্পটযুক্ত। এই মাছ বদ্ধ পানিতে কাদায় তথা তলদেশে বাস করে। পানি শুকালে এই মাছ নিজেকে কাদায় ডুবিয়ে দেয়। এগুলো অন্য মাছের পোনা, দিম ও ব্যাঙাচি খায়। বাংলাদেশের সর্বত্র পাওয়া যায়।
ছবিঃ
তারা বাইম, কোটা বাইম বা গাইচিঃ উপরোক্ত দুই প্রকার বাইমের মধ্যবর্তী দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট (১২-১৮ ইঞ্চি)। এই বাইমের পৃষ্ঠ এলাকায় কককগুলি কাঁটা থাকেযার আকার লেজের দিকে ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত। বর্ণ বাদামী ধরণের। এগুলো কর্দমাক্ত খালে বাস করে। জোয়ার ভাটা এলাকার লোনা পানিতেও এদের দেখা মেলে। এমনকি বর্ষাকালে ধান বা পাটক্ষেতেও দেখা যায়।
ছবিঃ
খললা বা হাল্লাঃ ছোট হতে মাঝারী আকারের এই মাছ, বাংলাদেশ, পশ্চিমবংগ ও মায়ানমারে পাওয়া যায়। দৈর্ঘে ৭-১৫ ইঞ্চি, উপরের দিকের বর্ণ হালকা বাদামী এবং নিচের দিকে তথা পেটের দিকে ক্রমশ সাদাটে ভাবাপন্ন। পিঠের ও লেজের পাখনা ধূসর বর্ণ। এই মাছ প্রধানত নদী ও মোহনার মাছ এবং পানির উপরের দিকে সাঁতার কেটে বেড়ায়। কিন্তু চমকিত হলে নিমেষে গভীর পানিতে ডুব মারে। বড় বড় নদীতে টানা জালের সাহায্যে এই মাছ ধরা হয়।
ছবিঃ
ভেদা বা মেনীঃ মাছটি ৫-৮ ইঞ্চি দীর্ঘ, গাত্রবর্ণ সবুজাভা বাদামী পিতলাভ চমক বিশিষ্ট। মুখ উপরের দিকে ঊঠানো ও পিঠের কাঁটা দৃঢ়। লেজের পাখনা দীর্ঘ ও গোলাকৃতি। এগুলো ছোট মাছ ও শুককীট খেয়ে জীবন ধারন করে। বাংলাদেশের সর্বত্র পাওয়া যায়।
ছবিঃ
ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
খলিশাঃ খলিশা মাছ বাংলাদেশের সর্বত্র পাওয়া যায়। গ্রামে-গঞ্জে যারা থাকেন তারা এই মাছ খুব ভালই চেনেন। তাই খাল-বিল বা ডোবায় জন্ম নেয় এই মাছ। খলিশা মাছের দেহের উপরিভাগ সবুজাভ এবং দেহ ডোরাকাটা। খলিশা মাছের প্রধান খাদ্য হলো, মশার শুক ও মূককীট। তাই মশা নিয়ন্ত্রণে খলিশা মাছের ভূমিকা অপরিসীম। এ ছাড়াও এদের খাদ্য তালিকার বড় অংশ জুড়ে রয়েছে শ্যাওলা বা অ্যালগী (algae)। এরা ডিম পাড়ার মাত্র ১৪-১৫ ঘন্টার মধ্যে পোনা নির্গত হয়।
ছবিঃ
আইর মাছঃ প্রায় ফুটখানেক লম্বা আঁশবিহীন মাছ। মিঠা পানি ও সমুদ্র তীরবর্তী লোনা পানিতে জন্ম নেয়। তাই সারা বাংলাদেশেই এই মাছ প্রচুর পরিমানে পাওয়া যায়। বড়শি দিয়ে এই মাছ ধরা খুব সহজ। এরা এদের চেয়ে ছোট মাছ ও বিভিন্ন জলজ পোকা মাকড় খেয়ে জীবন ধারণ করে। তাই মাছের চাষ করতে গেলে আইর মাছ পুকুরে রাখা বিপজ্জনক। কারণ, এরা পোনা মাছ খেতে পছন্দ করে।
ছবিঃ
টেংরাঃ টেংরা মাছ আমাদের দেশের অতি পরিচিত মাছগুলোর একটি। যেহেতু দেশী মাছ নিয়ে এই ব্লগ, তাই টেংরাকে বাদ দেয়া চলে না। এই মাছ বাংলাদেশের সর্বত্র পাওয়া যায়। এই মাছের ভর্তা খেতে দারুণ মজা! এই মাছ কর্দমাক্ত ও আগাছাযুক্ত জলাশয়ে পাওয়া যায়। বর্ষাকালে এই মাছ বাজারে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এই মাছ একুরিয়ামেও রাখা যায়।
ছবিঃ
ঘুংগাঃ ঘুংগা নামের এই মাছকে কাবাশী ট্যাংরাও বলা হয়। এরা দেখতেও ট্যাংরার মতই। তবে পেটের দিক হলুদাভ। খেতে অতি সুস্বাদু এই মাছ বাংলাদেশের সর্বত্র পাওয়া যায়। জাল ও বড়শি দ্বারা এই মাছ প্রচুর পরিমাণে ধৃত হয়।
ছবিঃ
জুংলাঃ অনেকটা অপরিচিত মাছ। ৬ ইঞ্চি দৈর্ঘের এই মাছের পিঠের পাখনা দেহের উচ্চতা হতে দীর্ঘতর। হালকা ধূসর বর্ণের। বক্ষদেশের কাঁটা ভেতরের দিকে খাঁজ কাটা থাকে।
ছবিঃ
রিটাঃ পায় এক ফুট দীর্ঘ এই মাছ স্বাদু ও লোনা পানিতে পাওয়া যায়। এই সুস্বাদু মাছের গাত্রবর্ণ সবুজাভ বাদামী। এরা ঘোলা পানিতে বেশী থাকে। (ঘোলা পানিতে মাছ শিকার কথাটা এদের থেকেই এসেছে কি?) এরা পোকা মাকড় ও অন্য মাছ খেয়ে জীবন ধারন করে। পোনা অবস্থায় বিভিন্ন জলজ উদ্ভিদের মূল খেয়ে বেঁচে থাকে।
ছবিঃ
কাকিয়া, কাইক্কা বা কাক্লিঃ এদের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল, দীর্ঘ চোঙ্গার মত দেহ এবং এর উভয় চোয়ালের অতি দীর্ঘকার ঠোঁট ও তাতে তীক্ষ্ণ দাঁতের সমাবেশ। সাধারণত নদীতে ও খালে এবং বর্ষাকালে সর্বত্র দেখা যায়। এদের পিঠের দিকটা কালচে ধূসর ও বুকের দিকে সাদা। এরা পেটুক ধরণের; ক্ষুদ্রাকার মাছ খায়।
ছবিঃ
চান্দাঃ অনেকটা গোলাকার ও সূক্ষ্ণ আঁশ যুক্ত। দুই পাশ উজ্জ্বল রূপালী। এরা পরিষ্কার পানিতে থাকতে পছন্দ করে, নদী, নালা, খাল, বিল সর্বত্র এদের দেখা মেলে। প্রায় ২ ইঞ্চি দীর্ঘ, দেহের বর্ণ হলুদাভ সাদা। এরা দিনে ১২০ টার মত মশার শুককীট ও মূককীট খেতে পারে। তাই মশা নিধনে এই মাছ কাজে লাগতে পারে।
ছবিঃ
ইলিশ মাছঃ বাংলাদেশের জাতীয় মাছ। তাই এই মাছ সবাই চেনে। এরা প্রকৃতপক্ষে লোনা পানির মাছ। তবে ডিম পাড়ার সময় হলে এরা নদীতে চলে আসে। মে-অক্টোবর মাসে ইলিশ মাছে বেশী পাওয়া যায়। রূপালী রঙের এই মাছ বাংলাদেশে একসময় প্রচুর পাওয়া যেত। তবে ইদানিং এই মাছ দুর্লভ হয়ে উঠছে।
ছবিঃ
চাপিলা, খয়রাঃ এরা দেখতে ছোট আকারের ইলিশ মাছের মত। ৪/৫ ইঞ্চি, রূপালী গাত্র বিশইষ্ট মাছটির ঘাড় ও পিঠ কালো ভাবাপন্ন। লেজ দ্বিধাবিভক্ত। এরা প্রধানত নদী-নালার মাছ, যদিও বর্ষাকালে বিল ও খালে ছড়িয়ে পড়ে। এরা পানির উপরের দিকে থাকে।
ছবিঃ
কান পোনা, সুবর্ণ খরিকাঃ বাংলাদেশের এই ক্ষুদ্রাকার মাছের পেটের দিক রূপালী ও পিঠের দিকে গভীর ধূসর এবং পিঠ কালো ব্যান্ড যুক্ত। এদের সাধারাণত পুকুরে ও ডোবায় এবং কিছু কিছু নদীতেও পাওয়া যায়। খাদ্য হিসেবে ব্যবহারের চেয়ে এদের মাছ ধরার টোপ হিসেবে বেশী ব্যবহার করা হয়।
ছবিঃ
ফাসা, ফেউয়া বা ফেউসাঃ ৭-৮ ইঞ্চি দৈর্ঘ বিশিষ্ট, লম্বাভাবাপন্ন, পৃষ্ঠদেশ সবুজাভ বর্ণযুক্ত এবং পেটের দিক সোনালী ভাব। পেটের দিকে দীর্ঘায়ীত ডানা রয়েছে। এই মাছ সর্বত্র প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। যদিও এই মাছ কন্টকপূর্ণ তথাপি এটা জনপ্রিয়। ডিম ছাড়ার সময় হলে এরা নদীপথে উজানের দিকে চলতে থাকে।
ছবিঃ
রুইঃ রুই মাছ বহুল প্রচলিত মাছগুলোর মধ্যে একটি। এই মাছের পেটের দিকে রূপালী সাদা এবং পিঠ ও পিঠের কাছাকাছি অংশ কালচে ভাবাপন্ন। ২০-৩০ ইঞ্চি ও ততোধিক দৈর্ঘ বিশিষ্ট এই মাছ বাংলাদেশের সবখানে পাওয়া যায়।
ছবিঃ
মৃগেল মাছঃ মৃগেল মাছের অন্যান্য বাংলা নাম হলো, মিরকা, মিরগা ইত্যাদি। কিছুটা রুই মাছের মত দেখতে, কিন্তু আনিপাতিক হারে দীর্ঘ ও সরু দেহ, ছোট মাথা, ছোট মুখ, উজ্জ্বল রূপালী দেহ এবং লালচে দানা এদের প্রধান বৈশিষ্ট্য। এদের মুখ কিছুটা নিচের দিকে স্থাপিত এবং সম্ভবত এ কারণে তারা পুকুরের নিচের দিকের তলানির খাদ্যসমূহ খেতে পারে। পরিণত বয়সের মাছ দুই লক্ষের অধিক ডিম দেয়।
ছবিঃ
কালবাউশ বা কালিবাউশঃ বাংলাদেশের কোথাও কোথাও এরা বাউশ, কালাঘনি, কালবাসু ইত্যাদি নামেও পরিচিত। কালচে দেহ ও ছোট নিম্নমূখী মুখ এদের বৈশিষ্ট্য। তাই মৃগেল মাছের মত এরাও পুকুরের নিচ এলাকার খাদ্য খেয়ে থাকে। নদী, নালা, খাল, পুকুর সর্বত্র এই মাছ ভালো জন্মে। বর্ষাকালে অগভীর পানিতে ডিম ছাড়ে।
ছবিঃ
ঘইন্যা, ঘনিয়া, গণি বা কুর্চিঃ রুই এর মত দেখতে এই মাছের প্রধান বৈশিষ্ট্য সামান্য সবুজাভ পৃষ্ঠ, রূপালী পেট ও আঁশের প্রান্তবর্তী কালচে দাগ। এই মাছ মূলত নদীর মাছ এবং কদাচিৎ দেখা যায়। এদের খাদ্যাভ্যাস অনেকটা মৃগেল ও কালবাউশের মত। এদের বর্শি দ্বারা ধরা যায়। এদের পিঠের ডানা অনেকখানি বিস্তৃত।
ছবিঃ
নন্দিনাঃ এই মাছ নন্দিল বা নন্দি নামেও পরিচিত। দেখতে প্রায় ঘনিয়া মাছের মত। এদের পিঠের দিকে ঘন সবুজাভ বর্ণ যা ক্রমশ নিচে এসে সাদায় পরিণত হয়েছে। কোন কোন আঁশের গায়ে কমলাভ লাল বর্ণ দেখা যায়। যদিও নদী নালার মাছ তবে পুকুরেও জন্মে। ঠোঁট পুরু ও কাটা। সাধারণত ১-২ ফুট লম্বা হয়।
ছবিঃ
বাটা বা খর্কি বাটাঃ এরা মৃগেল গণভুক্ত। কিন্তু আকারে অনেক ছোট। ৬-১২ ইঞ্চি হয়ে থাকে দৈর্ঘে। মলিন রূপালী, পেটের দিকটা সাদাটে। এরা নদীর মাছ এবং শামুক জাতীয় প্রাণি খেয়ে জীবন ধারন করে।
ছবিঃ
সরপুঁটি, সরালপুঁটি, স্বর্ণপুঁটি বা শের পুঁটিঃ এই মধ্যম হতে ছোট আকারের মাছ নদী, খাল ও পুকুরে দেখা যায়। এদের পৃষ্ঠভাগ কালচে ও মাথার কাছে সোনাল প্যাঁচযুক্ত এবং পেট সাদা। দৈর্ঘ ৫-১২ ইঞ্চি।
ছবিঃ
পুঁটিঃ বিভিন্ন পুঁটির মাঝে এটা প্রধান এবং বাংলাদেশের সর্বত্র প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এই মাছ তেলে কড়া ভাবে খেতে চমৎকার, এর দেহ রূপালী ও পিঠের কাছে ধূসরাভ। মাথার কাছে দেহে একটি ধূসরাভ, লালচে পোঁচ দেখা যায়। দৈর্ঘে ১-৩ ইঞ্চি এবং পুকুরে, খালে, বিলে দেখা যায়। এরা মশা ও অন্যান্য কীটের শুককীট ও উদ্ভিজ পদার্থ খেয়ে জীবন ধারণ করে।
ছবিঃ
ফুটানী পুঁটিঃ পুঁটি হতে ছোট ১.৫-২.৫ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়। এই মাছ বেশ চটপটে ও সবসময় ওঠানামা করতে থাকে। এর বর্ণ ময়লা সাদা, লেজের গোড়া থেকে সামান্য ভেতরে এক ধরনের কালো এলাকা দেখা যায়।
ছবিঃ
তিতপুঁটিঃ সবচেয়ে ছোট আকারের পুঁটি মাছ। মাত্র ১.৫ থেকে ২ ইঞ্চি লম্বা। রূপালী রঙের দেহে দুটি কালো ফোঁটা থাকে। নদী, নালা, খাল, বিল, পুকুর, ডোবা সর্বত্র পাওয়া যায়।
ছবিঃ
মোলা, মোয়া, মলা, মরারু, মৌচি, মোওয়া বা মওয়ালীঃ এই অতি পরিচিত ছোট মাছটি নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর ডোবা সর্বত্র পাওয়া যায়। ইহা ২-৪ ইঞ্চি দীর্ঘ; পানির উপরের স্তরের বাসিন্দা এবং উপরের এলাকার খাদ্যের খাদক। স্থানান্তর দ্বারা এই মাছের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়। এতে উচ্চ পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’ রয়েছে।
ছবিঃঢেলা, মাউয়া, কোটি বা গুনতাঃ এটি নদী-নালা, ও বিল-ঝিলের মাছ। বাংলাদেশের সর্বত্র পাওয়া যায়। এদের আকৃতি চৌকনা ধরনের, মাথা চাপা, মুখ ছোট, ঠোঁট পাতলা, পিঠের দিকে উঁচু। দেহ রূপালী কিন্তু পৃষ্ঠভাগ কালো এবং ডানা বা পাখনা সবুজাভ। এই মাছটিও মলার মত ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ বলে কথিত।
ছবিঃ
চেলা, বনস্পতি বা কাটারিঃ এটি ছোট, দীর্ঘাকৃতি ২-৪ ইঞ্চি দীর্ঘ মাছ। এগুলো উপরের স্তরের খাদক এবং শুককীট নাশক হিসেবে পরিগণিত। এগুলো নদী, বিল ও বন্যা প্লাবিত খালে পাওয়া যায়।
ছবিঃ
বাইলা, বেলে, বেলিয়া, ভালিয়াঃ এই ছোট হতে মাঝারী আকারের মাছ কিছুটা চোংগা আকৃতির। মাথার প্রায় পিছন দিকের কাছাকাছি চক্ষুযুক্ত মাছটি হলুদাভ-ধূসর বর্ণবিশিষ্ট ও প্রায় হাড় বিহীন ও মোলায়েম। এটি বিভিন্ন শ্রেণীর শৈবাল থেকে শুরু করে ছোট পোকা মাকড় ও মাছকে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। এগুলো সাদু ও লোনা উভয় প্রকার পানিতেই পাওয়া যায়। এই মাছ সাদু পানি থেকে লোনা পানিতে গিয়ে ডিম পাড়ে। এই মাছ বড়শি দ্বারা ধৃত হয় এবং ছোট চিংড়িকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
ছবিঃ
বাইমঃ এই মাছ দীর্ঘ ও খানিকটা চোংগাকৃতি, ১০-১৫ ইঞ্চি লম্বা, সবুজাভ দেহ-বর্নযুক্ত ও সুস্বাদু। পিঠের দিকে জলপাই-সবুজাভ ও নিচের দিকে সাদাটে। দেহের পাশে বহু ধূসরাভ সাদা স্পট দেখা যায়। এটি নদী-নালা ও খালের পরিষ্কার ও ঘোলাটে উভয় প্রকার পানিতেই বাস করে। এরা শ্যাওলা, মাটি, ছোট মাছ ও উদ্ভিদ ইত্যাদী খেয়ে জীবন ধারন করে। এদের দিম আঠার মত কোন কিছুকে অবলম্বন করে আটকে থাকে।
ছবিঃ
বামঃ এরা দেখতে বাইমের মত এবং বাইমের গণভুক্ত কিন্তু আকারে অনেক বড়; ১৫-২৫ ইঞ্চি দীর্ঘ। বাদামী বর্ণে, পৃষ্ঠ এলাকায় ও পাশে গভীর বাদামী স্পট ও ডোরা দেখা যায়। ডানা লেজের কাছাকাছি বিস্তৃত এবং বিভিন্ন প্রকার স্পটযুক্ত। এই মাছ বদ্ধ পানিতে কাদায় তথা তলদেশে বাস করে। পানি শুকালে এই মাছ নিজেকে কাদায় ডুবিয়ে দেয়। এগুলো অন্য মাছের পোনা, দিম ও ব্যাঙাচি খায়। বাংলাদেশের সর্বত্র পাওয়া যায়।
ছবিঃ
তারা বাইম, কোটা বাইম বা গাইচিঃ উপরোক্ত দুই প্রকার বাইমের মধ্যবর্তী দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট (১২-১৮ ইঞ্চি)। এই বাইমের পৃষ্ঠ এলাকায় কককগুলি কাঁটা থাকেযার আকার লেজের দিকে ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত। বর্ণ বাদামী ধরণের। এগুলো কর্দমাক্ত খালে বাস করে। জোয়ার ভাটা এলাকার লোনা পানিতেও এদের দেখা মেলে। এমনকি বর্ষাকালে ধান বা পাটক্ষেতেও দেখা যায়।
ছবিঃ
খললা বা হাল্লাঃ ছোট হতে মাঝারী আকারের এই মাছ, বাংলাদেশ, পশ্চিমবংগ ও মায়ানমারে পাওয়া যায়। দৈর্ঘে ৭-১৫ ইঞ্চি, উপরের দিকের বর্ণ হালকা বাদামী এবং নিচের দিকে তথা পেটের দিকে ক্রমশ সাদাটে ভাবাপন্ন। পিঠের ও লেজের পাখনা ধূসর বর্ণ। এই মাছ প্রধানত নদী ও মোহনার মাছ এবং পানির উপরের দিকে সাঁতার কেটে বেড়ায়। কিন্তু চমকিত হলে নিমেষে গভীর পানিতে ডুব মারে। বড় বড় নদীতে টানা জালের সাহায্যে এই মাছ ধরা হয়।
ছবিঃ
ভেদা বা মেনীঃ মাছটি ৫-৮ ইঞ্চি দীর্ঘ, গাত্রবর্ণ সবুজাভা বাদামী পিতলাভ চমক বিশিষ্ট। মুখ উপরের দিকে ঊঠানো ও পিঠের কাঁটা দৃঢ়। লেজের পাখনা দীর্ঘ ও গোলাকৃতি। এগুলো ছোট মাছ ও শুককীট খেয়ে জীবন ধারন করে। বাংলাদেশের সর্বত্র পাওয়া যায়।
ছবিঃ
ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ পোস্টটির জন্য।
ReplyDeleteখুব ভালো লাগল। আজকাল দেশি মাছ বিলুপ্তির পথে। এদের সংরক্ষণ করা আমাদের কর্তব্য।
ReplyDeleteআরো মাছ চিনতে চাই
ReplyDelete