উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন ধমনীতে অস্বাভাবিক রক্তের চাপ সৃষ্টি করে। যার ফলে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার পাশাপাশি হৃদরোগের সৃষ্টি হতে পারে।
আমাদের ধমনীতে রক্তের প্রবাহ এবং আমাদের হৃদয়ে পাম্পের পরিমাণ নির্ণয় করে রক্তচাপের পরিমাণ নির্ণয় করা হয়। আপনার হৃদয় যত বেশি রক্ত পাম্প করবে আপনার ধমনী তত বেশি সংকীর্ণ হবে। যার ফলে উচ্চ রক্তচাপের সৃষ্টি হয়।
উচ্চ রক্তচাপ একটি নিরব হত্যাকারী। যার ফলে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, হৃদরোগ, অঙ্গ ব্যর্থতা ও মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। আপনার ডাক্তার আপনাকে অনেকগুলো ঔষধ প্রদান করবে রক্তচাপ স্বাভাবিক করার জন্য। কিন্তু, আপনার রান্নাঘরেই এমন কিছু জিনিস রয়েছে, যা আপনার উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা সমাধান করবে। সেগুলো হল-
১. ব্যায়াম : অন্তত আধা ঘণ্টা ব্যায়াম উচ্চ রক্তচাপ কমিয়ে দেয় ৬ থেকে ৮ ইউনিট।
২. মেডিটেশন : ইয়োগা বা মেডিটেশন রক্তচাপ কমায়। উন্মুক্ত বাতাসে অন্তত পাঁচ মিনিট ধীরে ধীরে এবং দীর্ঘ দম নিলে রক্তচাপ কমে।
৩. আলু খান : পটাশিয়াম সমৃদ্ধ শাকসবজি বেশি খেতে হবে। এক্ষেত্রে বেশি আলু খাওয়াই হতে পারে রক্তচাপ কমানোর উৎকৃষ্ট উপায়।
৪. লবণ পরিহার : কাঁচা লবন খাওয়াই যাবে না। যথাসম্ভব খাবারেও লবণ কমাতে হবে। দৈনিক ১৫০০ মিলিগ্রামের বেশি লবণ খাওয়া নয়।
৫. চকোলেট খান : কালো চকোলেট খাওয়া যেতে পারে। তা ধমনিকে আরও স্থিতিস্থাপক করে।
৬. মদপান নয় : উচ্চ রক্তচাপ কমাতে মদ্যপান পরিহার করুন।
৭. ধুমপানও নয় : রক্তচাপ কমাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ধুমপান পরিহার করতে হবে।
৮. চা খান : চা খাওয়া যেতে পারে দৈনিক ৩ কাপ। এক গবেষণায় দেখা গেছে, দৈনিক ৩ কাপ চা ৬ সপ্তাহের মাথায় ৭ পয়েন্ট রক্তচাপ কমিয়েছে।
৯. কফি পান নয় : গবেষণায় জানা গেছে, কফি অর্থাৎ ক্যাফেইন রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়।
১০. কাজ করুন পরিমিত : সপ্তাহে ৪১ ঘণ্টার বেশি কাজ রক্তচাপ ১৫ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়।
১১. গান শুনুন : ক্ল্যাসিক কিংবা ধীরলয়ের গান শুনুন। গান শোনার সময় শ্বাস-প্রশ্বাসে গতি আসবে। রক্তচাপ কমবে।
১২. নাক ডাকা : ঘুমের মধ্যে নাক ডাকার অভ্যাস থাকলে তা পরিহারের চেষ্টা করুন। নাক ডাকলে ঘুম কম হয়, রক্তচাপ বেড়ে যায়।
১৩. সয়া খাবার : শর্করা জাতীয় খাবারের পরিবর্তে সয়াজাতীয় বা নিন্মচর্বির দুগ্ধজাত খাবার খেলে উচ্চ রক্তচাপ কমতে পারে।
১৪ লাল বনাম সাদা:
মাছ এবং মুরগি রক্তচাপ কমানোর জন্য কার্যকর ভূমিকা পালন করে। কিন্তু, গরুর মাংস আপনার শরীরের রক্তচাপ বৃদ্ধি করতে পারে। এমনকি বিষয়টি আরও অনেক খারাপের দিকে নিয়ে যেতে পারে। বিভিন্ন ধরণের সবজির সাথে মাছ ও মুরগি রান্না করে খেয়ে নিন। এতে আপনার স্বাস্থ্য সুরক্ষার সাথে সাথে মজাদার খাবারও উপভোগ করবেন।
১৫ রসুন:
রসুন ডায়েটের ক্ষেত্রে একটি ভাল খাদ্য এবং কুইজিন এর মূল খাদ্য উপাদান। বিভিন্ন গবেষণা মতে, সকালে এক টুকরা রসুন খেলে তা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। রসুন একটি প্রাকৃতিক ঔষধ যা কোলেস্টেরল এর পরিমাণ কমিয়ে আনে। আপনার রক্তচাপের পরিমাণও স্বাভাবিক রাখে।
১৬. পেঁয়াজ এবং মধু:
আপনি যদি খুব দ্রুত আপনার রক্তচাপ কমাতে চান, তাহলে দ্রুত এই টিপস অবলম্বন করতে পারেন। এক টেবিল চামচ পেঁয়াজের রসের সাথে দুই টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে খেয়ে নিন। সাথে সাথে রক্তচাপের পরিমাণ কমে যাবে। প্রতিদিন এই অভিসন্ধিটি খেয়ে নিন।
১৬. গাজর:
গাজর ও শাক একসাথে ব্লেন্ড করে এক গ্লাস শরবত বানিয়ে পান করুন। প্রতিদিন দুই গ্লাস করে পান করুন। এতে আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
১৭. কারি পাতা:
কারি পাতা বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করার একটি প্রাকৃতিক উৎস। একটি গ্লাসে পানি নিয়ে তিন-চারটি কারি পাতা ভিজিয়ে রাখুন। প্রতিদিন এই পানীয়টি পান করুন।
১৮. বীট রুট:
এই সুন্দর উদ্ভিজ্জ শরবত রক্তচাপ কমানোর একটি দুর্দান্ত উপায়। প্রতিদিন দুইবার পান করুন।
১৯. খাবারে লবণের পরিমাণ কমান:
একদিনে সর্বচ্চ ১,৫০০ মিলিগ্রামের অধিক লবণ খাবেন না।
এই সকল খাবার আপনার রক্তচাপ কমিয়ে আনতে সাহায্য করবে। তবে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিবেন। এতে আপনি সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে পারবেন।
Comments
Post a Comment