Skip to main content

দেশি বিদেশি ফলমূল









ফলের রাজ্যে স্বাগতম, এক সাথে সব ফল গুনাগুন সহ বর্ণনা: বেশি করে শাকসবজি ও ফলমুল খেলে মন মেজাজ প্রফুল্ল ও ফুরফুরে থাকে। শুধু তা-ই নয়, দৈনন্দিন কাজের উদ্যম বাড়ে। মনে সুখ থাকে। এমনটাই জানা গেছে নিউজিল্যান্ডের ওটাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায়।

ওটাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের মানব পুষ্টি বিভাগের অধ্যাপক ড, ক্যারোলিন হোরওয়াথ মানুষের মন মেজাজ ভালো থাকার সাথে খাবারের সম্পর্ক নিয়ে এ গবেষণা চালান। এ গবেষণায় যুক্ত ছিলেন মনোবিঙান বিভাগের গবেষক ড, তামলিন কোনার ও বোন্নি হোয়াইট। ব্রিটিশ জার্নাল অব হেলথ সাইকোলজিতে সম্প্রতি তাদের এ গবেষণা ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে।

২৮১ জন তরুণের উপর এ গবেষণা চালানো হয় যাদের গড় বয়স ২০। অনলাইনের মাধ্যমে টানা ২১ দিন গবেষণাকার্যক্রম চালানো হয়েছে। গবেষণায় প্রতি অংশগ্রহণকারীকে বয়স, লিঙ, অজন, উচ্চতা ও বংশ সংক্রান্ত সব তথ্য দিতে হয়েছে।

গবেষণায় অংশগ্রহণকারী তরুণদের টানা ২১ দিন ধরে প্রতি সন্ধ্যায় নিজেদের মন মেজাজ সম্পর্কে তথ্য জানাতে হতো। তাদের মন মেজাজ কেমন ছিল তা জানানোর পাশাপাশি প্রতিদিনের খাদ্য জালিকায় ফলমুল ছিল কি না তা জানাতে হতো। ফলমুলের পাশাপাশি কী পরিমাণ শাকসবজি খেয়েছে তাও জানাতে হতো। এছাড়া অস্বাস্থ্যকর হিসেবে পরিচিত কেক, বিস্কুট, আলুর চিপস প্রভৃতি কি পরিমাণে খেয়েছে তাও জানাতে হতো।

এসব হিসাবের ভিত্তিতে ড, কোনার বলেন, তরুণরা যে দিন বেশি করে ফলমুল ও শাকসবজি খেয়েছে, সেই দিন তারা খোশ মেজাজে ছিল। এ ছাড়া তারা কাজকর্মে বেশি উৎসাহ ও শক্তি পেয়েছে বলে দেখা গেছে।

অবশ্যই ফরমালিন মুক্ত ফল কিনুন। ফরমালিন নেই তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য যেই ফলের উপর মাছি ঘুরতে দেখবেন, সেই ফল কিনুন। ফল কিনে ঘন্টাখানেক পানিতে ভিজিয়ে রাখলেও ফরমালিন কমে যায়।

ড্রাগন ফলঃ
ড্রাগন ফল সারা বিশ্বেই জনপ্রিয়তায় শীর্ষে। আগে চীন ও থাইল্যান্ডে এ ফলের চাষ হলেও বর্তমানে বাংলাদেশে এর চাষাবাদ হচ্ছে। অন্য দেশের মতো আমাদের দেশে ড্রাগন ফল জনপ্রিয় হয়ে ওঠছে।
ড্রাগন ফল দেখতে ছোট এবং লাল টুকটুকে। খেতে দারুণ সুস্বাদু। এই ফল শুধু সুস্বাদু নয়, স্বাস্থ্যকরও বটে। ড্রাগন ফল নিয়মিত খেলে জটিল রোগসহ আরও অনেক রোগের ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব। এছাড়া এই ফল- ডায়বেটিস ও কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে, কোলেস্টরেল ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং অ্যাজমা ও ঠাণ্ডা-কাশির রোগীদের জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করে। রাজধানীর অলিগলি থেকে শুরু করে ছোট-বড় সব ফলের দোকানে পাওয়া যায় ড্রাগন ফল। ‘ড্রাগন ফলের জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়ে চলছে। প্রতিকেজি ড্রাগন ফল ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি করি। এছাড়া প্রতি পিস ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হয়। ড্রাগন ফল কিনে ঘরে রাখলে ১ সপ্তাহ ভালো থাকে। ফ্রিজে রাখলে ১ মাস পর্যন্ত সতেজ ও সজীব থাকে। এছাড়া বাচ্চারা খেতে খুব পছন্দ করে।

লেবুঃ
অতি পরিচিত লেবু হয়তো খাবার টেবিলে না খেতে খেতেই শুকিয়ে যায়। অন্য সব ফলের ভিড়ে লেবু ভীষণ কোণঠাসা। এই সাধারণ ফলটি কিন্তু পুষ্টিগুণে টেক্কা দিতে পারে যেকোনো ফলকে।

উচ্চ রক্তচাপ কমায়
লেবু সাইট্রাস পরিবারভুক্ত। লেবুতে আছে উচ্চমাত্রার ভিটামিন সি আর পটাশিয়াম। আছে আরও কিছু প্রয়োজনীয় উপাদান। তবে ভিটাসিন সি আর পটাশিয়াম মিলে শরীরের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। উপরন্তু লেবুর পটাশিয়াম হৃৎপিণ্ডের কর্মক্ষমতাও বাড়ায়।

মানসিক চাপ
লেবুর রসের ভিটামিন সি দূর করে মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা। মানসিক বিষন্তনতায় শারীরবৃত্তীয় কারণেই ভিটামিন সি-এর ঘাটতি দেখা দেয় দেহে। লেবুর রস সেটি পূরণ করে নিমেষেই। ফলে চাঙা হয়ে ওঠে মন।

সুস্থ দাঁতের জন্য
তাজা লেবুর রস দাঁতের ব্যথা উপশমে সাহায্য করে। মাড়ি থেকে রক্ত পড়া বন্ধ করতে লেবু খুব কার্যকর। মুখের গন্ধ রোধেও লেবুর রস কার্যকর। আর দাঁতে প্লাক জমার কারণে যে অনাকাঙ্ক্ষিত দাগ পড়ে, তা সারাতেও লেবুর রস সাহায্য করে।

কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়
রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে উল্লেখযোগ্য কাজ করে লেবুর রস। এটি শরীরের উপকারী কোলেস্টেরলের মাত্রা যেমন বাড়িয়ে দেয়, তেমনি ক্ষতিকর কোলেস্টেরল রাখে নিয়ন্ত্রণে।

গলার সংক্রমণ রোধে
লেবুর রসে আছে ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধী এক অনন্য বৈশিষ্ট্য, যার ফলে গলাব্যথা, মুখের ঘা আর টনসিলের সংক্রমণ রোধে সাহায্য করে লেবু।

সুন্দর ত্বকের জন্য
ত্বকের ক্ষত পূরণে লেবু ভারি কার্যকর। লেবু ত্বকে কোলাজেনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ফলে ত্বক উজ্জ্বল হয় আরও। ত্বকের পোড়া ভাব যেমন দূর করতে পারে লেবু, তেমনি চোখের চারপাশের কালো দাগও মিলিয়ে দিতে পারে।

আমঃ
১০০ গ্রাম আমে ক্যালরি আছে ৬০.১৫ গ্রাম, ফ্যাট ০.৩৮ গ্রাম, প্রোটিন ০.৮২ গ্রাম। আমে ভিটামিন এর মধ্যে আছে এ, বি, সি এবং মিনারেল এর মধ্যে আছে ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম ও জিঙ্ক। আমে আছে এন্টিঅক্সিডেন্ট যা ক্যান্সার প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। আম ভিটামিন এ দ্বারা সমৃদ্ধ। মাত্র ১০০ গ্রাম আমে যেই পরিমাণ ভিটামিন এ আছে তা দৈনিক ভিটামিন এ এর চাহিদার ৭৫% পূর্ণ করতে সক্ষম। ভিটামিন এ চোখের দৃষ্টি ও ত্বকের সৌন্দর্যের জন্য অত্যাবশ্যক।

জামঃ
১০০ গ্রাম জামে ক্যালরি আছে ৬০, এতে কার্বোহাইড্রেট আছে ১৫.৫৬ গ্রাম, ফ্যাট ০.২৩ গ্রাম, প্রোটিন ০.৭২ গ্রাম। জামে ভিটামিন এর মধ্যে আছে এ, বি, সি এবং মিনারেল এর মধ্যে আছে ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম ও সোডিয়াম। হাত-পা জ্বালায় জামের রস লাগালে চটজলদি কমে যায়। জামের বীজে “জাম্বোলিন” নামে একটি উপাদান আছে যা ডায়বেটিক্স রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী। জামের বীচি গুড়ো করে পানিতে মিশিয়ে দিনে ৩/৪ বার ডায়বেটিক্স রোগীকে খাওয়াতে হবে। এটি ডায়বেটিক্স রোগীর সারাক্ষন পিপাসা লাগা ও টয়লেট এ যাওয়াকেও নিয়ন্ত্রন করে। জাম মধু দিয়ে প্রতিদিন সকালে খেলে পাইলস এর রোগীর রক্তপাত বন্ধ হয়।

কাঠালঃ
১০০ গ্রাম কাঠালে পাওয়া যায় ৯৪ ক্যালরি। এতে কার্বোহাইড্রেট আছে ২৪ গ্রাম, প্রোটিন ১ গ্রাম। কাঠালে ভিটামিন এর মধ্যে আছে এ ও সি এবং মিনারেল এর মধ্যে আছে ক্যালসিয়াম ও আয়রন। কাঠালে আছে ফ্রুক্টোস এবং সুক্রোস যা অতি জলদি হজম হয়ে শরীরে ইন্সট্যান্টলি শক্তি যোগায়। প্রচন্ড ক্লান্ত হয়ে পরলে কাঠালের রস দুধে মিশিয়ে খেলে সাথে সাথে ক্লান্তি কেটে যায়। যাদের বুক ধরফরানি আছে, কাচা কাঠাল খোসাসহ অল্প পানি দিয়ে বেটে, নিংরে ৪/৫ ফোটা রস অল্প দুধে মিশিয়ে ৩/৪ ঘন্টা পরপর খেলে বুক ধরফরানো কমবে।

পেয়ারাঃ
ভিটামিন-সি আর ময়েশ্চারসমৃদ্ধ ফল পেয়ারা। পেয়ারা বর্ষাকালীন ফল হলেও বর্তমানে বাজারে ও অলিগলিতে মেলে এই ফলের সন্ধান। প্রায় এক হাজার ৩০ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিট ভিটামিন-এ এবং ৩৭৭ মিলিগ্রাম ভিটামিন-সি রয়েছে এই পেয়ারায়। উচ্চমাত্রার ভিটামিন-এ ও ‘সি’ ত্বক, চুল ও চোখের পুষ্টি জোগায়, ঠান্ডাজনিত অসুখ দূর করে। ত্বকের

স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য ময়েশ্চার জরুরি। পেয়ারায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ময়েশ্চার, যা তারুণ্য বজায় রাখে দীর্ঘদিন, ত্বকের রুক্ষ ভাব দূর করে ও শীতে পা ফাটা রোধ করে। পেয়ারার ভিটামিন-এ ছোটদের রাতকানা রোগ ভালো করে। তবে বাচ্চারা পেয়ারার বীজ হজম করতে পারে না। তাই তাদের বীজ বাদ দিয়ে পেয়ারা খাওয়ানো উচিত। একটা পেয়ারায় রয়েছে চারটি কমলালেবুর সমান পুষ্টি। তাই সপ্তাহে অন্তত একটি হলেও পেয়ারা খাওয়া উচিত। পেয়ারার খোসায় রয়েছে আঁশজাতীয় উপাদান। পেয়ারার ভেতরেও রয়েছে আঁশ, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে ও পাকস্থলীর ক্যানসার দূরীকরণে রাখে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। পেয়ারায় রয়েছে ক্যারটিনয়েড, পলিফেনল, লিউকোসায়ানিডিন ও অ্যামরিটোসাইড নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ক্ষতস্থান শুকানোর জন্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রাখে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। ত্বককে ক্ষতিকর আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি থেকে রক্ষা করে। ত্বক, চুল ও দাঁতের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। পুষ্টির বিচারে পেয়ারা হোক সবার নিত্যসঙ্গী।

লিচুঃ
১০০ গ্রাম লিচু তে ক্যালরি পাওয়া যায় ৬৬, এর মধ্যে কার্বোহাইড্রেট আছে ১৬.৫ গ্রাম, ফ্যাট ০.৪ গ্রাম, প্রোটিন ০.৮ গ্রাম। লিচুতে ভিটামিন এর মধ্যে আছে সি এবং মিনারেল এর মধ্যে আছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, কপার ও ফসফরাস। লিচু তে আছে “অলগোনোল” নামক একটি পদার্থ, এটি ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রতিরোধ করে, রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে ও ত্বক কে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে রক্ষা করে।

আনারসঃ
১০০ গ্রাম আনারসে পাওয়া যায় ৪৮ ক্যালরি। এতে কার্বোহাইড্রেট আছে ১২.৬৩ গ্রাম, ফ্যাট ০.১২ গ্রাম, প্রোটিন ০.৫৪ গ্রাম। আনারসে ভিটামিন এর মধ্যে আছে বি, সি এবং মিনারেল এর মধ্যে আছে ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাস, পটাশিয়াম ও জিঙ্ক। অপুষ্টিজনিত কারণে কেউ রোগা থাকলে, আনারস যে কয়টা দিন পাওয়া যায় রোজ খান। এটি ভরাট স্বাস্থ্যগঠনে ভূমিকা রাখে। বাইরে গরম থেকে ঘুরে এসে-ঠান্ডা পানি খেলে বা ফ্যান এর বাতাসের শরীরেই ঘাম শুকিয়ে ফেললে একধরণের কাশি হয় যাতে প্রচন্ড পিপাসা লাগে। রোজ আনারসে রস চিনি মিশিয়ে খেলে এই কাশি সেরে যায়। পেট ফাপলে আনারসের কয়েক টুকরো লবন ও গোলমরিচ মাখিয়ে খান। আনারসে আছে “ব্রোমিলেইন” নামক এনজাইম যা প্রোটিন ভেঙ্গে পরিপাকে সহয়তা করে। গবেষনায় দেখা গেছে নিয়মিত আনারস খেলে বাত হওয়ার সম্ভাবনা কম।

তরমুজঃ
১০০ গ্রাম তরমুজ এ পাওয়া যায় ৩০ ক্যালরি। এতে কার্বোহাইড্রেট আছে ৭.৫৫ গ্রাম, ফ্যাট ০.১৫ গ্রাম, প্রোটিন ০.৬১ গ্রাম। তরমুজ এ ভিটামিন এর মধ্যে আছে এ, বি, সি এবং মিনারেল এর মধ্যে আছে ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম ও জিঙ্ক। উচ্চমতার পটাশিয়াম রক্তচাপ ও স্ট্রোক নিয়ন্ত্রনে ভূমিকা রাখে, কিডনিতে পাথর ও বার্ধক্য জনিত হাড্ডি ক্ষয় রোধ করে। তরমুজের রস খেলে ইন্সট্যান্ট ক্লান্তি দূর হয়। তরমুজে আছে “লাইকোপিন” যা নানা ধরণের ক্যান্সার প্রতিরোধে ভুমিকা রাখে। তরমুজ শরীরে মেটাবলিসম বাড়িয়ে ওজন কমাতে সহায়তা করে। তাই অনেকে ভাতের বদলে তরমুজ খেয়ে ডায়েট করেন।

পেপেঃ
১০০ গ্রাম পেপেতে পাওয়া যায় ৩৯ ক্যালরি। এতে কার্বোহাইড্রেট আছে ৯.৮১ গ্রাম, ফ্যাট ০.১৪ গ্রাম, প্রোটিন ০.৬১ গ্রাম। তরমুজ এ ভিটামিন এর মধ্যে আছে এ, বি, সি এবং মিনারেল এর মধ্যে আছে ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম ও সোডিয়াম। পেপে কোষ্টকাঠিন্য দূর করে। কয়েক টুকরো পেপে লবন ও গোলমরিচ মিশিয়ে খেলে পেট ফাপায় কাজে দেয়। যেসব মেয়েদের মাসিক বন্ধ হওয়ার বয়স হয়েনি কিন্তু বন্ধ হয়ে গেছে, পাকা পেপের বীজ চূর্ণ (৪/৫ টা বীজে যতটুকু হয়) পানিতে মিশিয়ে দু-বেলা খেলে ঠিক হয়ে যায় (তবে টিউমারের কারণে বন্ধ হলে হবেনা)। ১ চামচ পেপের আঠা ৭/৮ চামচ পানি দিয়ে ফেটে চুলের গোড়ায় কিছুক্ষন রেখে ধুয়ে ফেললে উকুন মরে যায়।

জাম্বুরাঃ
টক-মিষ্টি জাম্বুরা লবণ-মরিচ দিয়ে মাখিয়ে খেতে ভীষণ ভালো লাগে! এর সালাদ বা জুস বানিয়েও খাওয়া হয়। এটি লেবু গোত্রের ফল হলেও এর স্বাদ অনেকটা আঙুরের মতো!

জাম্বুরা ফল হিসেবে যেমন চমত্‍কার তেমনি এর পুষ্টিগুণও ব্যাপক! জাম্বুরার প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যযোগ্য অংশে রয়েছে -

খাদ্যশক্তি- ৩৮ কিলোক্যালরি

শর্করা- ৯.৬ গ্রাম

খাদ্যআঁশ- ১ গ্রাম

চর্বি- ০.০ গ্রাম

আমিষ- ০.৭ গ্রাম

থায়ামিন- ০.০৩৪ মিলিগ্রাম

রিবোফ্লেভিন- ০.০২৭ মিলিগ্রাম

নিয়াসিন- .২২ মিলিগ্রাম

ভিটামিন বি৬- ০.০৩৬ মিলিগ্রাম

ভিটামিন সি- ৬১ মিলিগ্রাম

আয়রন- ০.১১ মিলিগ্রাম

ম্যাগনেসিয়াম- ৬ মিলিগ্রাম

ম্যাংগানিজ- ০.০১৭ মিলিগ্রাম

ফসফরাস- ১৭ মিলিগ্রাম

পটাশিয়াম- ২১৬ মিলিগ্রাম

সোডিয়াম- ১ মিলিগ্রাম

জিংক- ০.০৮ মিলিগ্রাম

রক্তনালির প্রদাহ কমাতে জাম্বুরার জুড়ি নেই!

এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। যা হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

এর ভিটামিন সি ও বি দাঁত, ত্বক ও চুলের সৌন্দর্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।

জ্বর, মুখের ঘা ইত্যাদি সারাতে জাম্বুরা সাহায্য করে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ও পাকস্থলীর রোগ প্রতিরোধে জাম্বুরা সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

অড়বড়ইঃ
টক স্বাদের পাকা অড়বড়ই ঝাল-লবণ দিয়ে মাখিয়ে খেতে ভীষণ মজা লাগে! এছাড়া এটা দিয়ে আচার, জুস, জেলি, চাটনি ইত্যাদিও তৈরি করা হয়। অনেকে এটা দিয়ে চমত্‍কার টক রান্না করেন বা ভর্তা তৈরি করেন। অড়বড়ইয়ের রস ভিনেগার তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। গাছের কচিপাতা ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডে শাক হিসেবে রান্না করে খাওয়া হয়। অড়বড়ইয়ের রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণও! প্রতি ১০০ গ্রাম অড়বড়ইয়ে রয়েছে -

জলীয় অংশ ৯১.৯ গ্রাম

আমিষ ০.১৫৫ গ্রাম

চর্বি ০.৫২ গ্রাম

খাদ্যআঁশ ০.৮ গ্রাম

ক্যালসিয়াম ৫.৪ মিলিগ্রাম

ফসফরাস ১৭.৯ মিলিগ্রাম

আয়রন ৩.২৫ মিলিগ্রাম

ক্যারোটিন ০.০১৯ মিলিগ্রাম

থায়ামিন ০.০২৫ মিলিগ্রাম

রিবোফ্লেভিন ০.০১৩ মিলিগ্রাম

নিয়াসিন ০.২৯২ মিলিগ্রাম

ভিটামিন সি ৪.৬ মিলিগ্রাম

অড়বড়ইতে কোনো ক্যালরি নেই। তাই বিনা দ্বিধায় খেতে পারেন এই চমত্‍কার ফলটি। অড়বড়ইয়ের রয়েছে অনেক ঔষধি গুণও! যেমন -

লিভারের অসুখের টনিক বানানো হয় এর বীজ দিয়ে।

পেটের অসুখ ও কৃমিনাশক হিসেবে এর বীজ ব্যবহার করা হয়।

অকাল বার্ধক্য রোধে ও ত্বকের রোগ প্রতিরোধে অড়বড়ইয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

অড়বড়ইয়ের রস চুলের গোড়ায় লাগালে চুল মজবুত হয় ও খুশকি দূর হয়।

মৌসুমি জ্বর প্রতিরোধে ও মুখের রুচি ফিরিয়ে আনতে ফলটি সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

তেঁতুলঃ
তেঁতুলের নাম শুনলেই জিভে জল আসে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। টক তেঁতুল মুখে দিলে আমাদের যে ভিন্ন এক অনুভূতি হয় তা নিশ্চয়ই বলতে হবে না। আমাদের অনেকেরই ধারণা তেঁতুল খেলে রক্ত পানি হয়ে যায়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে তেঁতুল কোনোভাবেই আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়। বরং হৃদরোগসহ বিভিন্ন রোগে খুব উপকারী। তেঁতুল বসন্ত-কালের ফল হলেও বছরের সব সময়ই পাওয়া যায়।

তেঁতুলে রয়েছে প্রচুর ভেষজ ও পুষ্টিগুণ:

তেঁতুল দেহে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং হৃদরোগীদের জন্য খুব উপকারী

রক্তের কোলেস্টেরল কমায়

শরীরের মেদ কমাতেও কাজ করে তেঁতুল

পেটে গ্যাস, হজম সমস্যা, হাত-পা জ্বালায় তেঁতুলের শরবত খুব উপকারী

খিদে বাড়ায়

গর্ভাবস্থায় বমি বমি বমি ভাব দূর করে

মুখের লালা তৈরি হয়

তেঁতুল পাতার ভেষজ চা ম্যালেরিয়া জ্বর কমানোর জন্য ব্যবহৃত হয়

শিশুদের পেটের কৃমিনাশক

তেঁতুল ক্যান্সারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সাহায্য করে

পাইলস্ চিকিত্সার জন্য ব্যবহার করা হয়

মুখে ঘাঁ ও ত্বকের প্রদাহ সারাতে সাহায্য করে

তেঁতুল রক্ত পরিস্কার করে

বাত বা জয়েন্টগুলোতে ব্যথা কমায়

ভিটামিন সি-এর বড় উৎস

পুরনো তেঁতুল খেলে কাশি সারে

পাকা তেঁতুলে খনিজ পদার্থ অন্য যে কোনো ফলের চেয়ে অনেক বেশি

খাদ্যশক্তিও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে

ক্যালসিয়ামের পরিমাণ সব ফলের চেয়ে ৫ থেকে ১৭ গুণ বেশি

আর আয়রনের পরিমাণ নারকেল ছাড়া সব ফলের চেয়ে ৫ থেকে ২০ গুণ বেশি।

প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা তেঁতুলের পুষ্টিমান:

ক্যালরি ২৩৯, আমিষ বা প্রোটিন – ২.৮, শর্করা – ৬২.৫ গ্রাম, ফাইবার – ৫.১ গ্রাম, চর্বি – ০.৬ গ্রাম, ফসফরাস - ১১৩ মিলিগ্রাম, লৌহ – ২.৮২ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম - ৭৪ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি - ২ মিলিগ্রাম, মিনারেল বা খনিজ পদার্থ ২.৯ গ্রাম, ভিটামিন বি – ০.৩৪ মিলিগ্রাম, পটাসিয়াম - ৬২৮ মি:লি, ভিটামিন ই – ০.১ মিলিগ্রাম, ক্যারোটিন ৬০ মাইক্রোগ্রাম, সেলেনিয়াম – ১.৩ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম - ২৮ মিলিগ্রাম, দস্তা – ০.১২ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম - ৯২ মিলিগ্রাম, এবং তামা – ০,৮৬ মিলিগ্রাম।

খেজুরঃ

*খাদ্যশক্তি থাকায় দুর্বলতা দূর হয়

*খেজুর স্নায়ুবিক শক্তি বৃদ্ধি করে

*রোজায় অনেকক্ষন খালি পেটে থাকা হয় বলে দেহের প্রচুর গ্লুকোজের দরকার হয়

*খেজুরে অনেক গ্লুকোজ থাকায় এ ঘাটতি পূরণ হয়

*হৃদরোগীদের জন্যও খেজুর বেশ উপকারী

*খেজুরের প্রচুর খাদ্য উপাদান রয়েছে

*খেজুর রক্ত উৎপাদনকারী

*হজমশক্তি বর্ধক, যকৃৎ ও পাকস্থলীর শক্তিবর্ধক

*রুচি বাড়ায়

*ত্বক ভালো রাখে

*দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে

*রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

*খেজুরের আঁশ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে

*পক্ষঘাত এবং সব ধরনের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অবশকারী রোগের জন্য উপকারী

*ফুসফুসের সুরক্ষার পাশাপাশি মুখগহ্বরের ক্যান্সার রোধ করে

*অন্তঃসত্ত্বা নারীর সন্তান জন্মের সময় খেজুর খেলে জরায়ুর মাংসপেশির দ্রুত সংকোচন-প্রসারণ ঘটিয়ে, প্রসব হতে সাহায্য করে

*এছাড়াও এ ফল প্রসব-পরবর্তী কোষ্ঠকাঠিন্য ও রক্তক্ষরণ কমিয়ে দেয়।

*যে কোনো ফলের চেয়ে খেজুরের পুষ্টিগুণ বেশি। সারা বছর পরিবারের সবার জন্য প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় আমরা এই ফলটিকে রাখতে পারি।

ঢেউয়াঃ
ঔষধি গুনাগুনঃ কাঁচা ফল স্বাদে অম্লরসাত্মক, ত্রিদোষজনক, ক্ষুধা অপহারক। পাকা ফল মধুরাম্ল রসবিশিষ্ট, গুরুপাক, কফবর্ধক, কামোদ্দীপক ও ক্ষুধাবর্ধক। বীজ বিরেচক। ঔষধার্থে প্রয়োগ পাকা ফল পিত্তবিকারে ও যকৃতের পীড়ায় হিতকারী। ইহা অতিসেবনে ক্লীবতা আনে। ছালের গুঁড়ো ও ক্কাথ গায়ের চামড়ার রুক্ষতায় বাহ্য প্রয়োগ করা হয়। তাছাড়া ব্রণের দুষিত পুঁজাদি বাহির করার জন্যও উক্ত ছালের পুল্টিস্ হিতকর। ইউনানী চিকিৎসকেরা এর বীজ শিশুদের বিরেচনের জন্য প্রয়োগ করে থাকেন।

১। দাস্ত অপরিস্কারেঃ- পরিস্কার হচ্ছে না, তখন কাঁচা ফল ৮/১০ গ্রাম থেতো করে এক কাপ গরম জলে মিশিয়ে সেটা ছেকে ঐ জলটা খেলে দাস্ত পরিস্কার হবে। এটা হয় রাত্রির দিকে নইলে সকালে খেতে হবে।

২। মেদ বাহুল্যে ;- খাওয়া-দাওয়ায় খুবই হিসেব করে চলেও শরীরে মেদ বেড়ে যাচ্ছে, এদিকে ক্ষিধেয় কমতি নেই, সে আবার যখন-তখন, এক্ষেত্রে কাঁচা ডেলোমাদারের/ডেহুয়া ফলের রস এক/দেড় চা-চামচ এক কাপ ঠান্ডা জলে মিশিয়ে কয়েকটা দিন খেতে হবে, এর দ্বারা ওই অস্বাভাবিক মেদ কমে যাবে। তবে মেদ কমাতে গেলে, আলু, চিনি বা যেকোন মিষ্টদ্রব্য খাওয়া বন্ধ করতে হবে, অবশ্য মধু একটু-আধটু খাওয়া যেতে পারে। কাঁচা ফল থেতো করে শুকিয়ে সেটাকে গুড়ো করে তিন গ্রাম মাত্রায় প্রত্যহ ঠান্ডা জলসহ খেতে হবে।

৩। অরুচি রোগে- টক, ঝাল, মিষ্টি যেটাই হোক না, কোন স্বাদের জিনিস মুখে দিতে ইচ্ছে হয় না, অথচ পেটে প্রচুর ক্ষিধে। এ রোগটার উৎপত্তি বেশীরভাগ ক্ষেত্রে পেটে আম এবং সেটা পিত্তসংযুক্ত আম কেবলমাত্র এক্ষেত্রে পাকা ডেলোমাদারের/ডেহুয়া রস ২/৩ চামচ এবং তার সঙ্গে একটু লবণ ও গোল মরিচের গুড়ো মিশিয়ে দুপুর বেলার খাওয়ার পূর্বে খেতে হবে, অবশ্য এটা ২-৪দিন খেতে হবে। এর দ্বারা ওই অরুচিটা চলে যাবে।

৪। শুক্রকীটের অপ্রতুলতায়;- এটাতে দেখা যায় হয়তো দাম্পত্য সুখের অপ্রতুলতা নেই, অথচ সন্তানাদি হচ্ছে না, এদিকে দেখা যায় স্ত্রীর সন্তান না হওয়ার মত কোন দোষ খুঁজেও পাওয়া যাচ্ছে না, সেখানে বুঝতে হবে, শুক্রে যত সংখ্যক কীট জন্মালে বা দীর্ঘ সময় বেঁচে থাকলে সন্তান হয় সেটা নিশ্চয়ই নেই। এইটাই যে কারন সেটা বর্তমানযুগে পরীক্ষা করে নেওয়ার তো আর অসুবিধে নেই, সুতরাং সেটা স্থির নিশ্চয় হলে এই পাকা ডেলোমাদার/ ডেহুয়া ফলের রস এক/দেড় চা-চামচ একটু চিনি মিশিয়ে অন্ততঃ মাসখানেক খেতে হবে। এটির ব্যবহারে শুক্রে কীটের আধিক্যও ঘটবে এবং দীর্ঘস্থায়ী হবে, তা হলেই সন্তান হওয়ার পথ সুগম হবে।

৬। পাতলা দাস্তেঃ- মলটা তরল হচ্ছে অথচ আমযুক্ত নয়। সেই রকম ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার্য্য। এইটার কারন ঘটেছে কোন গুরুপাক দ্রব্য খাওয়াতে অথবা ভাল হজম হয়নি, তার ওপর আবার খাওয়া হয়েছে, এক্ষেত্রে ডেলোমাদারের বীজের গুড়ো (মিহি) আধগ্রাম মাত্রায় ৩/৪ঘন্টা বাদ দুবার খেতে হবে।

বাহ্য প্রয়োগ :
৭। দূষিত ঘায়েঃ- যেকোন কারনে দূষিত ঘা (ক্ষত) হোক না কেন, ডেলোমাদারের/ ডেহুয়া গাছের ছাল চূর্ণ (মিহি) ওই ঘায়ের উপর ছড়িয়ে দিলে কয়েকদিনের মধ্যে ওই ঘা শুকিয়ে যাবে। 

বেশি করে শাকসবজি ও ফলমুল খেলে মন মেজাজ প্রফুল্ল ও ফুরফুরে থাকে। শুধু তা-ই নয়, দৈনন্দিন কাজের উদ্যম বাড়ে। মনে সুখ থাকে। এমনটাই জানা গেছে নিউজিল্যান্ডের ওটাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায়।

সতর্কতা : ফরমালিন যুক্ত ফলমূলে বাজার এখন সয়লাব। সুতরাং এক্ষেত্রে আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকা উচিৎ।

হালা ফল বা কেয়া ফলঃ



এটি আমাদের কাছে একটি অপরিচিত নাম। বাংলায় এটি কেয়া নামে পরিচিত। এর বৈজ্ঞানিক নাম Pandanus tectorius. এটি একটি অদ্ভুত সুদর্শন ফল। হালা ফল সাধারণত পূর্ব অস্ট্রেলিয়া ও প্যাসিফিক আইল্যান্ডস, ভারত ও আমাদের বাংলাদেশেও পাওয়া যায়। এটিকে প্রবালপ্রাচীরও বলা হয়। এটি স্থানীয়ভাবে খুবই জনপ্রিয় ঔষধ ও ফল হিসেবে পরিচিত। হালা গাছ ফল শুধুমাত্র মহিলা গাছ উপর বৃদ্ধি. এটি হলুদ রং হলে খাওয়া যায়. এটা দুর্ভিক্ষের সময় একটি খাদ্য হিসাবে পলিনেশিয়া সর্বত্র ব্যবহৃত হয়। হালা গাছ সাধারণত লম্বায় ৪-১৪ মিটার পর্যন্ত হয়। এটির পাতা সাধারণত ৯০-১৫০ সে.মি. হয়।

ব্যবহারঃ

1. ফল কাঁচা বা রান্না খাওয়া যায়.

2. ফলের FIBROUS প্রকৃতির একটি প্রাকৃতিক দাঁতের রেশমের ফেঁসো তোলে.

3. গাছ এর পাতার প্রায়ই যেমন কায়া জ্যাম হিসাবে খাওয়া হয়। এর মিষ্টি গন্ধ থালা - বাসনের জন্য ব্যবহৃত হয়.

4. পাতার ঔষধি বৈশিষ্ট্য, কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় মাথাব্যাথা এবং ফুলের নিরাময় তেল আছে.

5. এটির পাতার গন্ধ curries বিভিন্ন ধরনের ব্যবহার করা হয় যেখানে শ্রীলংকান পাকপ্রণালীর, ব্যবহার করা হয়.

6. পাতার ঝুড়ি, মাদুর পাল - খাটানর দণ্ডবিশেষ নৌকো পালের, তালপাতা ছাদ, এবং ঘাস skirts করতে পলিনেশিয়রাও দ্বারা ব্যবহার করা হয়.

7. শুষ্ক ফাইবার পেইন্টিং এর জন্য ব্রাশ হিসেবে ব্যবহৃত হয়. এর কাপা/টাপা (একধরনের পেইন্ট) মুছে ফেলা কঠিন।

চালতাঃ


চালতা ফল দিয়ে চাটনি ও আচার তৈরি হয়। এটি স্থানবিশেষে চালিতা, চাইলতে ইত্যাদি নামেও অভিহিত। গাছটি দেখতে সুন্দর বলে শোভাবর্ধক তরু হিসাবেও কখনো কখনো উদ্যানে লাগানো হয়ে থাকে। চালতা গাছ মাঝির আকারের চিরহরিৎ বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ। এ গাছ উচ্চতায় ১৫ মিটার পর্যন্ত হতে পারে। গাছের গায়ে লালচে রঙের চকচকে বাকল থাকে। পাতার কিনারা খাঁজ কাটা, শিরা উঁচু সমান্তরাল। চালতার সাদা রঙের ফুল দেখতে সুন্দর ; এটি সুগন্ধযুক্ত। ফুলের ব্যাস ১৫-১৮ সেন্টিমিটার। ফুলে পাঁচটি মোটা পাঁপড়ি থাকে ; বৃতিগুলো সেসব পাঁপড়িকে আঁকড়ে ঘিরে রাখে। বছরের মে-জুন মাসে ফুল ফোটার মৌসুম। ফল টক বলে চালতার আচার, চাটনি, টক ডাল অনেকের প্রিয় খাদ্য। পাকা ফল পিষে নিয়ে নুন-লংকা দিয়ে মাখালে তা বেশ লোভনীয় হয়। গ্রাম এলাকায় সাধারণত জঙ্গলে এ গাছ জন্মে ; কখনো কখনো দু’একটি গাছ বাড়ির উঠানে দেখা যায়। চালতা ফলের যে অংশ খাওয়া হয় তা আসলে ফুলের বৃতি। প্রকৃত ফল বৃতির আড়ালে লুকিয়ে থাকে। ফল বাঁকানো নলের মত ; ভিতরে চটচটে আঠার মধ্যে বীজ প্রোথিত থাকে। চালতা অপ্রকৃত ফল; মাংসল বৃতিই ভক্ষণযোগ্য।

বেলঃ


বেল একটি পুষ্টিকর ফল। এতে থাকে প্রচুর শর্করা, প্রোটিন, ভিটামিন ও খনিজ লবণ। গ্রীষ্মের কাঠফাটা দুপুরে এক গ্লাস বেলের শরবত খেলে কার না প্রাণ জুড়ায়। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে বেলের জুড়ি নেই।

পানি ফলঃ


গরমকালে পানি ফল আরেকটি পুষ্টিকর ফল। এতে শতকরা ৪.৭ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায় যা আপেল, আঙ্গুর, কলা ও পেয়ারা থেকে বেশি। এছাড়া রয়েছে শ্বেতসার, খনিজ লবণের মধ্যে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন ইত্যাদি। খাদ্যশক্তি পাওয়া যায় ১১৫ কিলোক্যালরি।

লটকনঃ


লটকন জাতীয় টক-মিষ্টি ফলে একসঙ্গে টক ও মিষ্টি ফলের গুণ রয়েছে। এ ধরনের ফল খেলে মানুষের শরীরের টক ও মিষ্টির ঘাটতি যথেষ্ট পরিমাণে পূরণ হয়। বলা হয়ে থাকে প্রতিদিন দু’চারটি লটকন জাতীয় ফল আমাদের দেহের ভিটামিন-সি এর ঘাটতি পূরণ করার জন্য যথেষ্ট। কোনো কারণে বমি বমি ভাব অনুভব হলে তা খেলে দ্রুত সেরে যায়। শরীরে ক্ষত বা ঘা থাকলে তা খেলে দ্রুত ক্ষত বা ঘা শুকায়। অত্যাধিক তৃষ্ণা নিবারণে বন্ধুর মতো কাজ করে এই টক জাতীয় ফলটি।

জামরুলঃ


বাংলাদেশের অনেক জেলায় এই ফলটি প্রচুর পরিমাণে জন্মে। একেক দেশে ফলটি একেক নামে পরিচিত। ফিলিপাইন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া এবং সামোয়ার নিম্নভূমিতে প্রচুর পরিমাণে জামরুল জন্মে। এই ফলটি দেখতে বেশ সুন্দর। ফলের ভেতরে কোনো আঁশ থাকে না। তবে রসে থাকে ভরপুর। জামরুল পুষ্টিগুণে অনন্য। এতে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে খনিজ পদার্থ।

বাঙ্গিঃ


বাঙ্গি একটি পুষ্টিকর ফল। বাঙ্গির পুষ্টিগুণ অনেক, এতে প্রচুর পরিমাণে শর্করা, ক্যারোটিন ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে।

করমচাঃ


ভীষণ টক স্বাদের এই ফলটি আমাদের দেশের গ্রামাঞ্চলে বেশ জনপ্রিয় হলেও শহুরে বাজারে এর দেখা খুব কম মেলে। গ্রীষ্মের শেষ এবং বর্ষা শুরুর সন্ধিক্ষণে পথে-ঘাটে বিক্রেতার ডালায় দেখতে পাওয়া যায় করমচা। টক স্বাদের বলে লবণ দিয়ে মাখিয়ে করমচা খেতে ভীষণ ভালো লাগে। নানা পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ হলেও করমচা আমাদের দেশে মোটামুটি অবহেলিতই বলা চলে!

কামরাঙ্গাঃ


কামরাঙ্গা ফল বিশ্বে বিভিন্ন নামে পরিচিত যেমন_ স্টার ফ্রুট (তারা ফল) ক্যারামবোলা প্রভৃতি। এই ফলটির উৎপত্তি মূলত শ্রীলঙ্কায়। পরবর্তী সময়ে ভারত, বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, চীনসহ ইউরোপ-আমেরিকা মহাদেশে চাষ হয় এবং এটি বিশ্বব্যাপী টক-মিষ্টি ফল হিসেবে বেশ পরিচিত। কিন্তু উচ্চ মাত্রার ভিটামিন সি সমৃদ্ধ কামরাঙ্গায় উল্লেখযোগ্য আরো রয়েছে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন বি৯ (ফোলেট) মিনারেল হিসেবে রয়েছে পটাশিয়াম ফসফরাস জিংক প্রভৃতি।

এটি এন্টি অক্সিডেন্টের ভালো উৎসই শুধু নয় এর রয়েছে এন্টি মাইক্রোবিয়াল এবং ক্যানসার বা অস্বাভাবিক কোষ অপরাসরণের ক্ষমতা। কামরাঙ্গা ফলের মধ্যে যতই গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন এবং মিনারেল থাকুক না কেন, পাকা কামরাঙ্গা জুস যতই সুস্বাদু লাগুক না কেন কামরাঙ্গার মধ্যে এমন দুইটি উপাদান রয়েছে যা মানব শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ ঘটাতে পারে এবং অতীতে বহু মানুষের কামরাঙ্গা খাবার কারণে মৃত্যু ঘটেছে এমন কি এই ফল খাবার ১ ঘণ্টা পরেই মৃত্যু ঘটার মতো ঘটনা ঘটেছে। খাবার পর যে সব লক্ষণ বা প্রতিক্রিয়া দেখা যায় তার মধ্যে বিরামহীন হেচকি , বমি বমি ভাব, মাথা ঘুরানো, মানসিক ভারসাম্যহীনতা প্রভৃতি।

কুল বা বরইঃ

বরই গাছ ছোট থেকে মাঝারি আকারের ঝোপাল প্রকৃতির বৃক্ষ। বরই গাছের স্বাভাবিক উচ্চতা ১২-১৩ মিটার। এই গাছ পত্রঝরা স্বভাবী অর্থাৎ শীতকালে পাতা ঝরে, বসন্তে নতুন পাতা আসে। বরই গাছের ডাল-পালা ঊর্ধ্বমুখী। বৎসরের সেপ্টেম্বরে - অক্টোবরে মৌসুমে গাছে ফুল আসে। ফল ধরে শীতে। ফল গোলাকার, ছোট থেকে মাঝারি। ফল আকারে ছোট, কমবেশী ২.৫ সেন্টিমিটার। ফল পাকলে রঙ হলুদ থেকে লাল বর্ণ হয়। কাঁচা ও পাকা উভয় পদের বরই খাওয়া হয়। স্বাদ টক ও কাঁচামিঠা জাতীয়। বরই রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করা যায়। পাকা বরই শুকিয়ে চাটনী প্রস্তুত করা হয়।

লুকলুকি বা পাইন্ন্যাগুলাঃ


লুকলুকি বা পাইন্ন্যাগুলা একটি মিষ্টি ও সুস্বাদু দেশীয় ফল। দেখতে আঙুর ফলের মতো। এ ফলে রয়েছে প্রচুর টসটসে রস। তাই স্থানীয় ভাষায় এর নাম ‘পাইন্ন্যাগুলা’।

পাইন্ন্যাগুলা ফলে রয়েছে শতকরা ৬০ ভাগ আয়রন। সালফার, ফসফেট ছাড়াও ১০ ভাগ রয়েছে ভিটামিন সি। অন্যান্য উপাদানও রয়েছে সমভাবে।

ওষুধি ফল হিসেবে পাইন্ন্যাগুলার বেশ কদর রয়েছে। এ ফল খেলে হজমশক্তি ও লিভারের কার্যক‍ারিতা বৃদ্ধি পায়। হৃদরোগীদের জন্য এটি উপকারী ভেষজ ঔষধের কাজ করে। তাছাড়া এর পাতা ও ফল ডায়রিয়া রোগের প্রতিরোধক। শুকনো পাতা ব্রংকাইটিস রোগের জন্য বিশেষ উপকারী। এর শিকড় দাঁতের ব্যাথা নিরাময়ে কাজ করে।

হরীতকীঃ


হরীতকী মধ্যম থেকে বৃহদাকারের পাতাঝরা বৃক্ষ। আমাদের দেশের বনাঞ্চলে বা গ্রামাঞ্চলে বিক্ষিপ্তভাবে এ গাছ দেখা যায়। উচ্চতা ৪০ ফুট পর্যন্ত হতে পারে। ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে পাতা ঝরে নতুন পাতা গজাতে থাকে।

হরীতকীর বৈজ্ঞানিক নাম Terminalia chebula. বাংলাদেশ ও ভারতে এর আদি নিবাস। বাকল গাঢ় বাদামি। বাকলে লম্বা ফাটল থাকে। পাতা লম্বা-চ্যাপ্টা, কিনার চোখা, লম্বায় পাঁচ-ছয় ইঞ্চি।

ফুল ফোটে ডালের শেষ প্রান্তে। রং হালকা হলুদাভ সাদা। ফল লম্বাটে, মোচাকৃতি। লম্বায় প্রায় দেড় ইঞ্চি। কাঁচা ফল সবুজ, পরিপক্ব ফল হালকা হলুদ। শুকালে কালচে খয়েরি রং হয়। ফলের ত্বক ভীষণ শক্ত। এই ফল বছরের পর বছর ভালো থাকে। ফলের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত লম্বা লম্বা পাঁচ-ছয়টি শিরা থাকে। ফলের বাইরের আবরণ কুঁচকানো। ডিসেম্বর থেকে মে মাস পর্যন্ত ফল সংগ্রহ করা হয়। ফলের ভেতর একটিমাত্র ভীষণ শক্ত বীজ থাকে।

হরীতকীর কাঠ খুব মজবুত। এই কাঠ ফ্রেম, খুঁটি, আসবাব তৈরিতে ব্যবহূত হয়। বীজ থেকে চারা তৈরি করা যায়।

প্রচলিত আছে, প্রতি সকালে এক কাপ পরিমাণ হরীতকী ভেজানো পানি ব্যবহার করলে রোগ থেকে দূরে থাকা যায়। আমলকী ও বিভীতকীর (বহেড়া) সঙ্গে হরীতকী ভেজানো পানি, সব রোগের আশ্চর্য মহৌষধ।

হরীতকী চূর্ণ ঘিয়ের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে, পিত্তশূল দূর হয়। পাইলস, হাঁপানি, চর্ম রোগ, ক্ষত রোগ, কনজাংটিভাইটিস রোগে হরীতকী ব্যবহূত হয় বিশেষভাবে পরিশোধনের মাধ্যমে।

হরিতকী তিতা গন্ধ বিশিষ্ট। ইহা ট্যানিন, এ্যামাইনো এসিড, ফ্রুকটোজ, সাকসিনিক এসিড এবং বিটা সাইটোস্টেরল সমৃদ্ধ। ইহা রক্ত চাপ এবং অন্ত্রের খিঁচুনি হ্রাস করে। হৃদপিন্ড ও অন্ত্রের অনিয়ম দূর করে। ইহা রেচক, কষাকারক, পিচ্ছিলকারক, পরজীবীনাশক, পরিবর্তনসাধক, অন্ত্রের খিঁচুনি রোধক এবং স্নায়বিক শক্তিবর্ধক। তাই ইহা নতুন ও পুরাতন কোষ্ঠকাঠিন্য, স্নায়বিক দুর্বলতা, অবসাদ এবং অধিক ওজন এর চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। হরিতকীতে এ্যানথ্রাকুইনোন থাকার কারণে ইহা রেচক বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ।

ডাবঃ


ডাবের পানির ব্যপারে নতুন করে কিছু বলার নেই। সুস্বাদু এই পানীয়টি গোটা এশিয়া ও লাতিন আমেরিকার মানুষের কাছে এটি সমান প্রিয়। তবে কেবল পানীয় হিসাবেই নয়, ডাবের পানির মধ্যে বিজ্ঞানীরা ওষুধিগুণও খুঁজে পেয়েছেন। ডায়রিয়াতে এর পানি উপকার অনেক বেশী। এটি হার্টের পক্ষেও ভালো কাজ করে। এখন আবার জানা গেছে ডাবের পানি ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে অনেক বেশী সক্ষম। বছরের পর বছর ব্যবহার করার ফলে চলতি এন্টিবায়োটিক ওষুধ রোগজীবাণু প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে। ফলে এই সমস্যা মোকাবিলায় বিজ্ঞানীরা

নজর দিয়েছেন শরীরে রোগ প্রতিরোধ গড়ে তোলার মূল বস্তু বিভিন্ন প্রোটিনের প্রতি। যখন কোনো রোগজীবাণূ শরীরে প্রবেশ করে, আমাদের দেহের প্রতিরোধ কোষ প্রোটিন দিয়ে তৈরি এন্টিবড়ি উত্পন্ন করে।

বিজ্ঞানীরা গাছপালার বিভিন্ন অংশ যেমন ফুল, পাতা, মূল ইত্যাদি থেকে রোগজীবাণু ধ্বংসকারী প্রোটিন তৈরি করেছেন। পশ্চিমবঙ্গ ও ব্রাজিলের একদল গবেষক ডাবের পানির মধ্যে খুঁজে পেয়েছেন তিনটি নতুন ধরনের বিভিন্ন গুণসম্পন্ন পেপটাইজম যা বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া যারা খাদ্যকে বিষিয়ে দেয়, দুধ ও মাংসকে নষ্ট করে তাদের মেরে ফেলে। আগামী দিনে এইসব পেপটাইজম ভবিষ্যতের এন্টিবায়োটিক ওষুধের উপাদান হিসেবে ব্যবহূত হবে বলে গবেষকরা জানিয়েছেন।

আমলকীঃ

আমলকী গাছ ৮ থেকে ১৮ মিটার উচ্চতা বিশিষ্ট হতে পারে, পাতা ঝরা প্রকৃতির। হালকা সবুজ পাতা, যৌগিক পত্রের পত্রক ছোট, ১/২ ইঞ্চি লম্বা হয়। হালকা সবুজ স্ত্রী ও পুরুষফুল একই গাছে ধরে। ফল হালকা সবুজ বা হলুদ ও গোলাকৃতি ব্যাস ১/২ ইঞ্চির কম বেশি হয়। কাঠ অনুজ্জল লাল বা বাদামি লাল। বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলে ই দেখা যায়। গাছ ৪/৫ বছর বয়সে ফল দেয়। আগষ্ট - নভেম্বর পর্যন্ত ফল পাওয়া যায়। বীজ দিয়ে আমলকির বংশবিস্তার হয়। বর্ষাকালে চারা লাগানোর উপযুক্ত সময়। আমলকির ভেষজ গুণ রয়েছে অনেক। ফল ও পাতা দুটিই ওষুধরূপে ব্যবহার করা হয়। আমলকিতে প্রচুর ভিটামিন ‘সি’ থাকে। পুষ্টি বিজ্ঞানীদের মতে, আমলকিতে পেয়ারা ও কাগজি লেবুর চেয়ে ৩ গুণ ও ১০ গুণ বেশি ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে। আমলকিতে কমলার চেয়ে ১৫ থেকে ২০ গুণ বেশি, আপেলের চেয়ে ১২০ গুণ বেশি, আমের চেয়ে ২৪ গুণ এবং কলার চেয়ে ৬০ গুণ বেশি ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে। একজন বয়স্ক লোকের প্রতিদিন ৩০ মিলিগ্রাম ভিটামিন ‘সি’ দরকার। দিনে দুটো আমলকি খেলে এ পরিমাণ ভিটামিন ‘সি’ পাওয়া যায়। আমলকি খেলে মুখে রুচি বাড়ে। স্কার্ভি বা দন্তরোগ সারাতে টাটকা আমলকি ফলের জুড়ি নেই। এছাড়া পেটের পীড়া, সর্দি, কাশি ও রক্তহীনতার জন্যও খুবই উপকারী।

আমড়াঃ


বৃক্ষগুলি ২০-৩০ ফুট উঁচু হয়, প্রতিটি যৌগিক পাতায় ৮-৯ জোড়া পত্রক থাকে পত্রদন্ড ৮-১২ ইঞ্চি লম্বা এবং পত্রকগুলো ২-৪ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়। কাঁচা ফল টক বা টক মিষ্টি হয়, তবে পাকলে টকভাব কমে আসে এবং মিষ্টি হয়ে যায়। ফলের বীজ কাঁটাযুক্ত। ৫-৭ বছরেই গাছ ফল দেয়। এই ফল কাচা ও পাকা রান্না করে বা আচার বানিয়ে খাওয়া যায়। ফল, আগস্ট মাসে বাজারে আসে আর থাকে অক্টোবর পর্যন্ত। আমড়া কষ ও অম্ল স্বাদযুক্ত ফল। এতে প্রায় ৯০%-ই পানি, ৪-৫% কার্বোহাইড্রেট ও সামান্য প্রোটিন থাকে। ১০০ গ্রাম আমড়ায় ভিটামিন-সি পাওয়া যায় ২০ মিলিগ্রাম, ক্যারোটিন ২৭০ মাইক্রোগ্রাম, সামান্য ভিটামিন-বি, ক্যালসিয়াম ৩৬ মিলিগ্রাম, আয়রন ৪ মিলিগ্রাম। আমড়ায় যথেষ্ট পরিমাণ পেকটিনজাতীয় ফাইবার এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্টজাতীয় উপাদান থাকে। আমড়া একটি ভিটামিন-সি-সমৃদ্ধ ফল (প্রতি ১০০ গ্রাম আমড়ায় ২০ মিলি গ্রাম পাওয়া যায়)। ইহা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে ওজন কমাতে সহায়তা করে, রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়, অ্যান্টি-অক্সিডেন্টজাতীয় উপাদান থাকায় আমড়া বার্ধক্যকে প্রতিহত করে।

মরহুম সাদেক

Comments

Popular posts from this blog

ঢাকার কোথায় কি পাওয়া যায়?

কোন শাক-সবজি ও ফলের কী ভিটামিন?

গবাদি পশুর রোগ ও তার প্রতিকার

কৃষি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহ

মুসলিম জীবনের আদব-কায়দা