Skip to main content

একনজরে পবিত্র হজ ও হজ্জযাত্রীদের করণীয়



হজ্জ-এর সংজ্ঞা (معنى الحج) :
‘হজ্জ’-এর আভিধানিক অর্থ: সংকল্প করা (القصد)। পারিভাষিক অর্থ: আল্লাহর নৈকট্য হাছিলের উদ্দেশ্যে বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে শরী‘আত নির্ধারিত ক্রিয়া-পদ্ধতি সহকারে মক্কায় গিয়ে বায়তুল্লাহ যেয়ারত করার সংকল্প করা।

ওমরাহ-এর সংজ্ঞা (معنى العمرة) :
‘ওমরাহ’-এর আভিধানিক অর্থ : আবাদ স্থানে যাওয়ার সংকল্প করা (الاعتمار) , যিয়ারত করা। পারিভাষিক অর্থ: আল্লাহর নৈকট্য হাছিলের উদ্দেশ্যে বছরের যেকোন সময় শরী‘আত নির্ধারিত ক্রিয়া-পদ্ধতি সহকারে মক্কায় গিয়ে বায়তুল্লাহ যেয়ারত করার সংকল্প করা।


হজ্জ-এর সময়কাল (أشهر الحج) :

হজ্জের জন্য নির্দিষ্ট তিনটি মাস হ’ল শাওয়াল, যুলক্বা‘দাহ ও যুলহিজ্জাহ । এ মাসগুলির মধ্যেই যেকোন সময় হজ্জের ইহরাম বেঁধে বায়তুল্লাহর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিতে হয় এবং ৯ই যিলহাজ্জ তারিখে আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করতে হয়। ৯ তারিখে আরাফাতের ময়দানে অবস্থান না করলে হজ্জ হবে না। পক্ষান্তরে ‘ওমরাহ’ করা সুন্নাত এবং বছরের যেকোন সময় তা করা চলে।[1]


হুকুম (حكم الحج والعمرة) :

নিরাপদ ও সুষ্ঠু যোগাযোগ ব্যবস্থা সহ দৈহিক ও আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান মুমিনের জন্য জীবনে একবার হজ্জ করা ফরয।[2]অধিকবার হজ্জ বা ওমরাহ করা নফল বা অতিরিক্ত বিষয়’।[3]বারবার নফল হজ্জ ও ওমরাহ করার চাইতে গরীব নিকটাত্মীয়দের মধ্যে উক্ত অর্থ বিতরণ করা এবং অন্যান্য দ্বীনী কাজে ছাদাক্বা করা উত্তম।

৯ম অথবা ১০ম হিজরীতে হজ্জ ফরয হয়। হাফেয ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) এ মতকেই অগ্রাধিকার দিয়েছেন। তবে জমহূর বিদ্বানগণের মতে ৬ষ্ঠ হিজরীতে হজ্জের হুকুম নাযিল হয় এবং রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লা-হু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) ১০ম হিজরীতে জীবনে একবার ও শেষবার সপরিবারে হজ্জ করেন।[4] তিনি জীবনে মোট ৪ বার ওমরাহ করেন।[5]

ফযীলত (فضائل الحج والعمرة) :

مَنْ حَجَّ للهِ فَلَمْ يَرْفُثْ وَلَمْ يَفْسُقْ رَجَعَ كَيَوْمٍ وَلَدَتْهُ أُمُّهُ، متفق عليه-

১.রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লা-হু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ্জ করেছে। যার মধ্যে সে অশ্লীল কথা বলেনি বা অশ্লীল কার্য করেনি, সে হজ্জ হ’তে ফিরবে সেদিনের ন্যায় (নিষ্পাপ অবস্থায়) যেদিন তার মা তাকে প্রসব করেছিল’।[6]

اَلْعُمْرَةُ إِلَى الْعُمْرَةِ كَفَّارَةٌ لِّمَا بَيْنَهُمَا وَالْحَجُّ الْمَبْرُوْرُ لَيْسَ لَهُ جَزَاءٌ إِلاَّ الْجَنَّةُ، متفق عليه-

২. রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘এক ওমরাহ অপর ওমরাহ পর্যন্ত সময়ের (ছগীরা গোনাহ সমূহের) কাফফারা স্বরূপ। আর কবুল হজ্জের প্রতিদান জান্নাত ব্যতীত কিছুই নয়’।[7]

হজ্জের প্রকারভেদ:

তামাত্তুকিরানইফরাদ
১. ওমরাহর ইহরাম (ফরজ)হজ ও ওমরাহর ইহরাম (ফরজ)হজের ইহরাম (ফরজ)
২. হজের ইহরাম (ফরজ)ওমরাহর তাওয়াফ (ফরজ)--
৩. ওমরাহর সাঈ (ওয়াজিব)ওমরাহর সাঈ (ওয়াজিব)--
৪. --তাওয়াফে কুদুম (সুন্নত)তাওয়াফে কুদুম (সুন্নত)
৫. --সাঈ (ওয়াজিব)--
৬. মাথা মুণ্ডন করা বা চুল খাটো করা (ওয়াজিব)----
৮ জিলহজ জোহরের নামাজের আগে থেকে
৭. হজের ইহরাম (ফরজ)----
৮. মিনায় রাতযাপন (সুন্নত)মিনায় রাতযাপন (সুন্নত)মিনায় রাতযাপন (সুন্নত)
৯. জোহর, আসর, মাগরিব, এশা, ফজর নামাজ মিনায় পড়া (মুস্তাহাব)জোহর, আসর, মাগরিব, এশা, ফজর নামাজ মিনায় পড়া (মুস্তাহাব)জোহর, আসর, মাগরিব, এশা, ফজর নামাজ মিনায় পড়া (মুস্তাহাব)
৯ জিলহজ সূর্যোদয়ের পর
১০. আরাফাতে অবস্থান (ফরজ)আরাফাতে অবস্থান (ফরজ)আরাফাতে অবস্থান (ফরজ)
আরাফার দিন সূর্যোস্তের পর মুজদালিফার দিকে রওনা
১১. মুজদালিফায় অবস্থান (ওয়াজিব)মুজদালিফায় অবস্থান (ওয়াজিব)মুজদালিফায় অবস্থান (ওয়াজিব)
১০ জিলহজ
১২. বড় জামরাকে (শয়তান) কঙ্কর মারা (ওয়াজিব)বড় জামরাকে (শয়তান) কঙ্কর মারা (ওয়াজিব)বড় জামরাকে (শয়তান) কঙ্কর মারা (ওয়াজিব)
১৩. কোরবানি করা (ওয়াজিব)কোরবানি করা (ওয়াজিব)--
১৪. মাথার চুল পুরো ফেলে দেওয়া বা চুল খাটো করা (ওয়াজিব)মাথার চুল পুরো ফেলে দেওয়া বা চুল খাটো করা (ওয়াজিব)মাথার চুল পুরো ফেলে দেওয়া বা চুল খাটো করা (ওয়াজিব)
শারীরিক সম্পর্ক ছাড়া সবকিছু হালাল
১৫. তাওয়াফ (ইফাজা বা জিয়ারত)(ফরজ)তাওয়াফ (ইফাজা বা জিয়ারত)(ফরজ)তাওয়াফ (ইফাজা বা জিয়ারত)(ফরজ)
সম্পূর্ণ হালাল হয়ে যাবে
১৬. সাঈ (ওয়াজিব)--সাঈ (ওয়াজিব)
১১-১২ জিলহজ জোহরের সময় থেকে শুরু করে কঙ্কর মারা
১৭. ১১-১২ তারিখ ছোট, মধ্যম, বড় শয়তানকে পাথর মারা (ওয়াজিব)১১-১২ তারিখ ছোট, মধ্যম, বড় শয়তানকে পাথর মারা (ওয়াজিব)১১-১২ তারিখ ছোট, মধ্যম, বড় শয়তানকে পাথর মারা (ওয়াজিব)
১৮. বিদায়ী তাওয়াফ (ওয়াজিব)বিদায়ী তাওয়াফ (ওয়াজিব)বিদায়ী তাওয়াফ (ওয়াজিব)

উল্লেখ্য, ইফরাদ ও কিরান হজকারী তাওয়াফে কুদুম করবেন। তাওয়াফে কুদুমের সঙ্গে সাঈ করলে তাওয়াফে জিয়ারতের পর আর সাঈ করতে হবে না। তবে কিরান হজকারীদের জন্য তাওয়াফে কুদুমের সঙ্গে সাঈ করা, ইফরাদ হজকারীদের জন্য তাওয়াফে জিয়ারতের সঙ্গে সাঈ করা উত্তম। তামাত্তুকারীরা হজের ইহরামের পরে নফল তাওয়াফ করে সাঈ করে নিলে তাওয়াফে জিয়ারত বা ইফাজের সময় আর সাঈ করতে হবে না।


হজ্জযাত্রীদের করণীয়:


একনজরে হজ্জের কার্যক্রম:

Comments

Popular posts from this blog

ঢাকার কোথায় কি পাওয়া যায়?

কোন শাক-সবজি ও ফলের কী ভিটামিন?

গবাদি পশুর রোগ ও তার প্রতিকার

কৃষি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহ

মুসলিম জীবনের আদব-কায়দা