Skip to main content

ইসলামি সংস্কৃতি কী?


সংস্কৃতি সভ্যতার অলংকার। প্রধান উপজীবিকা। সমাজ ও রাষ্ট্রের গতি সঞ্চালক। জাতি-গোষ্ঠির চিন্তা-চেতনা, বিশ্বাস ও ঐতিহ্যের প্রতীক। মানুষ জন্মগতভাবেই সংস্কৃতির অনুগামী। তাই মানব সভ্যতার সূচনা থেকে জগতে সংস্কৃতির পদযাত্রা শুরু হয়েছে।

গ্রীক দার্শনিক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এ্যরিস্টেটলের মতে সংস্কৃতি হলো, ‘মানুষের বিনোদন ও অবিনোদনমূলক এমন সামাজিক ও পারিবারিক আচরণসমূহ যা তারা যুগ যুগান্তরে ধারণ করে এবং তা থেকে তৃপ্তি খুজে পায়।’ ইসলাম সংস্কৃতিকে ঐতিহ্য ও আত্মতৃপ্তির মতো দুর্বল ভিতের উপর ছেড়ে না দিয়ে ঈমান, আকিদা ও বিশ্বাসের শক্ত ভিতের উপর দাড় করিয়েছে। তার জগতমুখি ভোগবাদী রূপ পরিহার করে একটি সার্বজনীন কল্যাণকর ও অর্থবহ রূপ দান করেছে। ইসলাম মনে করে মানুষ সর্বশ্রেষ্ঠ জীব। সুতরাং তার জীবনের কোনো কাজ ও আচরণ অর্থহীন হতে পারে না।

বিংশ শতাব্দীর মুজাদ্দিদ সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী রহ• ইসলামি সংস্কৃতির পরিচয় ও ব্যপ্তি তুলে ধরে বলেন, ‘এটি একটি জীবন্ত ও বাস্তবমুখী বিষয়বস্তু। যার সম্পর্ক শুধু মুহাম্মদ সা• এর মিশন, ইসলামের বার্তা ও শিক্ষার সাথেই নয়। বরং তা জীবনের স্বরূপ, মানবতার বর্তমান ও ভবিষ্যত এবং সভ্যতা-সংস্কৃতির বিনির্মানের সাথে সম্পৃক্ত। সময়ের দিক দিয়ে এর ব্যপ্তি ইসলামের প্রথম শতাব্দী থেকে আমাদের বর্তমান শতাব্দী পর্যন্ত। ভৌগোলিক আওতায় তা পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত। আর মর্মগত ব্যপ্তি আকিদা-বিশ্বাস থেকে চরিত্র ও আচরণ পর্যন্ত। ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবন থেকে রাজনীতি, আইন এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক পর্যন্ত। চিন্তাগত, জ্ঞানগত ও চারিত্রিক সংশোধন ও উন্নয়ন থেকে নিয়ে নির্মাণ-শিল্প, কাব্য-সাহিত্য এবং নন্দনতত্ত্ব পর্যন্ত বিস্তৃত।’
(সভ্যতা ও সংস্কৃতিতে ইসলামের অবদান-১৯)

সংস্কৃতি বৈচিত্রময়। বহুমুখি। স্থান ও কাল, সমাজ ও রাষ্ট্রভেদে তা হয় নানা রূপ ও আঙ্গিকের। প্রত্যেক জাতি-গোষ্ঠি ও সমাজের একটি নিজস্ব ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি রয়েছে। যা তারা লালন করে। পালন করে এবং ধারণ করে জীবনের নানা স্তরে। সংস্কৃতি স্বতন্ত্র জাতিস্বত্ত্বার প্রতীক। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে,

لِكُلٍّ جَعَلْنَا مِنكُمْ شِرْعَةً وَمِنْهَاجًا

‘আমি প্রত্যেক জাতিকে দান করেছি নিজস্ব ধর্ম ও জীবনাচার।’ (সুরা মায়েদা-৪৮)

আকার-আঙ্গিকে সংস্কৃতি বহুরূপি হলেও সভ্যতার সংঘাত তত্ত্বের প্রবক্তা স্যামুয়েল ফিলিপ হান্টিংটন এর মতে সভ্যতা ও সংস্কৃতি মৌলিকভাবে দুটি ভাগে বিভক্ত।



এক. ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি। যার ভিত্তি সংযম ও পরকালমুখি জীবনদর্শন।
দুই. পশ্চিমামুখি অনৈসলামিক সভ্যতা ও সংস্কৃতি। যার ভিত্তি অবাধ ও উদার ভোগবাদী জীবনদর্শন।

এজন্য ইসলামি সভ্যতার সঙ্গে পৃথিবীর অন্য যে কোনো সভ্যতার সঙ্গে সংঘাত অনিবার্য। (THE CLASH OF CIVILIZATION)

ইসলাম যা ব্যক্ত করেছে এভাবে, الكفر ملة واحدة ‘সব কুফরি শক্তি একই জাতিভূক্ত’ অর্থাৎ মানসিকতা ও মৌলিক দৃষ্টিভঙ্গির দিক থেকে ইসলাম ভিন্ন অন্য সকল মতাদর্শের অনুসারীগণ এক ও অভিন্ন। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা)

স্যামুয়েল হান্টিংটনের বক্তব্য বিশ্লেষণ করলে আমরা বলতে পারি, ইসলামি সভ্যতা ও সাংস্কৃতির প্রাণ হলো, আল্লাহর প্রতি অগাত আস্থা ও বিশ্বাস। তার বৈশিষ্ট্য হলো, এটি পরকালমুখি। ঈমানের রঙ্গে রঙ্গীন। রাসুলুল্লাহ সা. এর আনুগত্যে ভরপুর। একজন মুসলিম জীবনের কোনো ক্ষেত্রেই আল্লাহর আনুগত্য থেকে বের হতে পারে না। সে সর্বক্ষেত্রে রাসুলুল্লাহ সা. এর প্রদর্শিত পথে আল্লাহর আনুগত্য করবে। যেমনটি ইরশাদ হয়েছে,


أَلا لِلَّهِ الدِّينُ الْخَالِصُ

‘জেনে রেখো, আল্লাহরই প্রাপ্য নিরঙ্কুশ আনুগত্য’ (সুরা যুমার-৩)

কিন্তু যখন মুসলিম জাতির সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনে অপরাপর জাতি-গোষ্ঠির সভ্যতা ও সংস্কৃতি প্রভাব বিস্তার করবে। সেখানে প্রবৃত্তি পূজারীদের আনুগত্য, বস্তুগত লিপ্সা প্রবেশ করবে বা তা জাগতিক চিন্তার মধ্যে ঘুরপাক খাবে। তখন মুসলিম জাতির উপর চারিত্রিক অধপতন এবং সামাজিক নৈরাজ্য ছড়িয়ে পড়বে। সর্বোপরি তারা একটি নিঃস্ব ও অস্থির জীবনের মুখোমুখি হবে। সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী রাহ. এর ভাষায়, ‘ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতির সুষ্ঠু চর্চা করা এবং তা বিশ্বময় ছড়িয়ে দেয়া মুসলমানের পবিত্র দায়িত্ব। যদি তারা দায়িত্ব পালনে অবহেলা করে তাহলে শুধু তারা নয় বরং সমগ্র মানব জাতি বিপদ ও সংকটে পড়ে যাবে। পৃথিবীতে ফেৎনা ও বিশৃংখলা ছড়িয়ে পড়বে। এ ব্যাপারে পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে,

إِلاَّ تَفْعَلُوهُ تَكُن فِتْنَةٌ فِي الأَرْضِ وَفَسَادٌ كَبِيرٌ

‘যদি তোমরা তা না করো তবে ভূ-পৃষ্ঠে গোলযোগ ও বিরাট বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়বে।’ (সুরা আনফাল-৭৩)

পবিত্র কুরআনে শুধু হুশিয়ার করেনি বরং পূর্ববতী জাতিসমূহের পরিণতিও স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। ইরশাদ হয়েছে,

فَلَوْلاَ كَانَ مِنَ الْقُرُونِ مِن قَبْلِكُمْ أُوْلُواْ بَقِيَّةٍ يَنْهَوْنَ عَنِ الْفَسَادِ فِي الأَرْضِ


‘হায়! তোমাদের আগের জাতিগুলোর মধ্যে যদি কিছুসংখ্যক সচেতন মানুষ থাকতো! যারা পৃথিবীতে বিপর্যয় থেকে বারণ করতো।’ (সুরা হুদ-১১৬)

ইসলামি সভ্যতা-সংস্কৃতি ও জীবনদর্শনের মূল উদ্দেশ্য হলো, মানুষকে মানসিক দাসত্ব মুক্তি দেয়া। তাদেরকে বস্তু ও মানুষের গোলামি থেকে মুক্ত করে একটি মুক্ত স্বাধীন আলোকিত জীবনের পথ দেখানো। যেখানে মহান স্রষ্টা আল্লাহ ছাড়া আর কারো গোলামি থাকবে না। পারস্য সেনাপতি রুস্তমের জিজ্ঞাসার উত্তরে একজন মুসলিম সেনাপতি তেমনটিই বলেছিলেন। তিনি বলেন,

الله ابتعثنا لنخرج من شاء من عبادة العباد الى عبادة الله ومن ضيق الدنيا الى سعتها ومن جور الاديان الى عدل الاسلام. 

‘আল্লাহ আমাদেরকে এজন্য প্রেরণ করেছেন, যেনো আমরা মানুষকে বান্দার গোলামি থেকে মুক্ত করে আল্লাহর গোলামির দিকে নিয়ে আসি। সংকীর্ণ পৃথিবী থেকে মুক্ত বিশ্বের দিকে এবং ধর্মীয় অবিচার থেকে ইসলামের ন্যায়পরায়ণ ছায়াতলে নিয়ে আসি।’ (আল বেদায়া ওয়ান নেহায়া, আল্লামা ইবনে কাসির রহ•)


ইতিহাস সাক্ষী কল্যাণমুখি ইসলামের ধর্মীয় জীবনের চর্চা ও সুষ্ঠু সাংস্কৃতির লালনের মাধ্যমে আরবের একটি অন্ধকারাচ্ছন্ন অধপতিত জাতি বিশ্ব নেতৃত্বের আসনে আসীন হয়। ইংরেজ ইতিহাসবিদ উইলফ্রেড ক্যাস্টবিল স্মিথ চমৎকার লিখেছেন, ‘মুসলমানের সফলতা তাদের ধর্মের অভ্যন্তরীণ সফলতা। তারা শুধু যুদ্ধের ময়দানেই বিজয়ী হয়নি এবং তারা শুধু জীবনের সব শাখায়ই প্রভাব ফেলেনি; বরং তারা তূলনামূলক কম সময়ে জীবনকে এমন একটি সামগ্রিক রূপ দানে সফল হয়েছে যাকে সভ্যতা বা সংস্কৃতি বলে।’
(ISLAM IN MORDERN HISTORY, NEW YORK, 1957, PP 36. 37)

অপরদিকে জাগতিক সভ্যতা ও মোহময় সংস্কৃতির লীলভূমি রোম ও পারস্য সম্রাজ্য ধ্বংস হয়ে গেছে। তাদের সাংস্কৃতিক জৌলুস কালের উপহাসে পরিণত হয়েছে। আবার মুসলিম জাতি যখন তাদের চরিত্র ধারণ করেছে তখন তাদের জাগতিক ভৈবব ও রাজনৈতিক ক্ষমতা মূল্যহীন হয়ে পড়ে। স্পেনের মুসলিম সম্রাজ্যের ইতিহাস, তাজমহল ও আল হামরার অসহায় সাংস্কৃতিক জৌলুস আমাদেরকে সে কথায় স্মরণ করিয়ে দেয়।


জাতির পথপ্রদর্শক মুসলিম ধর্মবেত্তাদের একটি কথা স্মরণ রাখতে হবে। মানুষের জীবন, মানব সভ্যতা কোনো নির্দিষ্ট বিন্দুতে স্থির নয়। তা গতিশীল। সর্বদা চলমান। তাই কিছুকাল পর পর সময়কে নতুনভাবে পর্যালোচনা করতে হবে এবং মানব সভ্যতার জন্য সময়ের উপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করে তাকে ক্ষতিকর উপাদান ও বিপর্যয়ের প্রবণতা থেকে রক্ষা করতে হবে।

হযরত নদভী রহ• জাতির রাহবার আলেমদের দায়িত্ব তুলে ধরে যা বলেন তার সারকথা হলো, তাদের এক হাত সব সময় থাকবে উম্মতের নাড়ির উপর আর দৃষ্টি থাকবে কুরআন-হাদিস ও খোদায়ি বিধানের প্রতি। যখনই কোনো রোগ বা অস্বাভাবিকতা ধরা পড়বে তখনই তারা তার চিকিৎসা করবেন। (জীবন পথের পাথেয়)

কারণ, মানব জাতিকে রক্ষার করার মহান দায়িত্ব আমাদেরই। ইরশাদ হয়েছে,

كُنتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ تَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَتَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنكَرِ وَتُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ

‘তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি, যাদের সৃষ্টি করা হয়েছে মানুষের জন্য। তোমরা ভালো কাজের আদেশ করবে এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করবে। এবং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রাখবে।’ (সুরা আল ইমরান-১১০)

আফসোস! বর্তমানে মুসলিম জাতি ধ্বংসাত্মক সংস্কৃতি ও বিপর্যয় সৃষ্টিকারী জীবনদর্শন দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বিশ্ব নেতৃত্ব থেকে ছিটকে পড়েছে। এবং তারা একটি বৃত্তবদ্ধ জীবনের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। ইসলামি রেঁনেসার কবি ফররুখ আহমদের ভাষায়

“দীঘল রাতের শ্রান্ত সফর শেষে

কোন দরিয়ার কালো দিগন্তে আমরা পড়েছি এসে?

এ কী ঘন-সিয়া জিন্দেগানীর বা’ব
তোলে মর্সিয়া ব্যথিত দিলের তুফান-শ্রান্ত খা’ব
অস্ফুট হয়ে ক্রমে ডুবে যায় জীবনের জয়ভেরী।”

(পাঞ্জেরি, সাত সাগরের মাঝি)

এই দুর্দিনের কারণ, বিশ্ব নেতৃত্ব নিজেদের সোনালী অতীত ও বিগত দিনের কৃতিত্বের মাধ্যমে অর্জিত হয় না। তা অর্জন করতে হয়, উন্নয়নের অব্যাহত প্রচেষ্টা, চলমান দায়িত্ববোধ, ত্যাগের সার্বক্ষণিক প্রস্তুতি ও অনন্যতা ও নতুনত্ব দ্বারা। তাই মুসলিম উম্মাহর দায়িত্ব হলো, নতুনভাবে, নতুন আঙ্গিকে নিজেদের দাওয়াতি, সাংস্কৃতিক ও নেতৃত্বসূলভ ভূমিকায় উদ্যমী হওয়া। আজ পশ্চিমা সংস্কৃতির যে স্বেচ্ছাচারিতা ও আগ্রাসন মুসলিম বিশ্বকে গ্রাস করেছে তা থেকে তাকে রক্ষা করতে এবং সময় উপযোগী ইসলামি ধারার বিকল্প সুষ্ঠু সংস্কৃতি উপহার শতভাগ প্রয়াসী হওয়া। নতুবা মুসলিম সমাজ আজকের পতন থেকে মুক্তি দেয়া সম্ভব হবে না। এটা সময়ের দাবি এবং আমাদের সামাজিক ও ধর্মীয় দায়িত্ব।

আর যদি আমরা আরো সীমিতভাবে বিনোদন অর্থে সংস্কৃতির ব্যাখ্যা করি। সে ক্ষেত্রে ইসলামের বিধান হলো, ইসলাম মানুষকে সব ধরণের বৈধ বিনোদনের অনুমতি দিয়েছে। তা শিল্প, সাহিত্য, খেলাধুলা ও সঙ্গীত যে কোনো ক্ষেত্রে হোক না কেনো। বিনোদনের ব্যাপারে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি হলো, তা যেনো প্রথানির্ভর ও প্রবৃত্তিসর্বস্ব না হয়।


বরং মানুষের কোনো না কোনো উপকার আসে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনের দিকে তাকালে আমরা দেখি তিনি একদিকে যেমন, ঘোড় দৌড়, তীর নিক্ষেপ ও দৌড় প্রতিযোগিতার মতো উপকারী খেলাধুলা; জিহাদের ময়দানে চেতনা উদ্দীপক সঙ্গীত এবং ঈমান জাগরুক কবিতার অনুমতি দিয়েছেন।

অপরদিকে তেমন মদ-জুয়ার মতো চরিত্র বিধ্বংসী বিনোদন ও খেলা; বিদ্বেষ ও অহংকার মূলক কবিতা এবং অশ্লীল সঙ্গীত ও সাহিত্য থেকে কঠোরভাবে বারণ করেছেন। যা মানুষকে তার জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থেকে বিচ্যূত করে অসার ভোগবাদে লিপ্ত করে। মহান প্রভূর পরিচয় জানা এবং তার আনুগত্য থেকে বিমুখ করে। বরং তার জাগতিক জীবনকেও অশান্ত অস্থির করে তুলে। ইসলাম ভিত্তিহীন অবান্তর বিনোদন থেকে শুধু নিষেধ করেনি বরং তাতে লিপ্ত হওয়ার ব্যাপারে কঠোর হুশিয়ারী উচ্চারণ করেছে। ইরশাদ হয়েছে,

وَمِنَ النَّاسِ مَن يَشْتَرِي لَهْوَ الْحَدِيثِ لِيُضِلَّ عَن سَبِيلِ اللَّهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَيَتَّخِذَهَا هُزُوًا أُولَئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ مُّهِينٌ

‘একশ্রেণীর লোক আছে যারা মানুষকে পথভ্রষ্ট করার জন্য অবান্তর কথাবার্তা সংগ্রহ করে। এবং তা নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে। তাদের জন্য রয়েছে অবমাননাকর শাস্তি।’ (সুরা লোকমান-৬)

হাদিসে শরিফে ইরশাদ হয়েছে,

مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ

‘যে ব্যক্তি যে জাতির সাথে সাদৃশ্য রাখবে সে তাদেও অন্তরগত।’ (আবু দাউদ শরিফ)

এ হাদিসে ইসলাম জীবনের কোনো অঙ্গনকে বিশেষভাবে উল্লেখ করেনি। মুসলমান জীবনের যে ক্ষেত্রে অন্যেও সাদৃশ্য গ্রহণ করবে। সে সে ক্ষেত্রে তাদের পতন হবে। আজ বিশ্বায়নের যুগে সংস্কৃতির মুক্ত মঞ্চে সমগ্র বিশ্ব যেভাবে ভোগবাদী পশ্চিমা সংস্কৃতি গ্রহণ করছে বিশেষ করে মুসলিম উম্মাহ যে নিঃশর্ত আনুগত্য প্রকাশ করছে তাতে ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি আজ হুমকির মুখে। তাই জাতির সাংস্কৃতিক অস্তিত্ব রক্ষার জন্য ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার কোনো অন্যথা নেই।



আতাউর রহমান খসরু

http://www.islamandlife.org

Comments

Popular posts from this blog

ঢাকার কোথায় কি পাওয়া যায়?

কোন শাক-সবজি ও ফলের কী ভিটামিন?

গবাদি পশুর রোগ ও তার প্রতিকার

কৃষি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহ

মুসলিম জীবনের আদব-কায়দা